ঋণের দায়ে পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা হতে পারে শ্রীলংকার মতোই! সতর্কীকরণ কেন্দ্রের

কলকাতাঃ বর্তমানে বিরাট অর্থনৈতিক সঙ্কটে জেরবার পড়শি দেশ শ্রীলঙ্কা। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সেখানে সত্যিই আকাশ ছুঁয়েছে। এর জেরে থাকা-খাওয়ার জোগান দিতেই বর্তমানে হিমশিম খাচ্ছেন সেখানকার জনতা। এই অবস্থার মাঝেই কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবদের মতে এই একই হাল হয়ে পারে পশ্চিমবঙ্গ সরকারেরও। তাদের কথায় নানা রকম জনমোহিনী প্রকল্পের জন্য খুব শীঘ্রই রাজ্যের কোষাগারের অবস্থা হতে পারে বেহাল। রাজ্য সরকার যেভাবে টাকা খরচ করছে মানুষের মধ্যে এই নিয়েই উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন তারা। এখনই হাল না ধরলে অবস্থা হবে গ্রিস বা শ্রীলংকার মতোই।
সরকারের মন্ত্রক থেকে জন্য যাচ্ছে যে, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া পাঞ্জাব, দিল্লী, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তেলেঙ্গানা নিয়েও উদ্বিগ্ন তারা। আসন্ন ভোটের মূহুর্তে বিনামূল্যে বিদ্যুৎ, রান্নার গ্যাস ইত্যাদির ঘোষণায় চিন্তাব্যক্ত করেছেন তারা। বিনামূল্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে গিয়ে রাজ্যের কোষাগারের অবস্থা হচ্ছে বেহাল। তবে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মুখ খুলতে চাননি রাজ্য সরকারের কেউই। তারা রাজনৈতিক কাদা ছোড়াছুড়ির জন্য প্রস্তত হয়ে বলেন, কেন্দ্র সরকারের রাজ্যের কোষাগার নিয়ে এত চিন্তা করার কারন কি? এছাড়া শাসকদল থেকে আরো প্রশ্ন আসে যে, উত্তরপ্রদেশ, গোয়া ইত্যাদি রাজ্যেই তো অনেক জনমোহিনী প্রকল্প এসেছে! তা নিয়ে কেন্দ্র সরকারের তো কোনো উদ্বেগ দেখা যাচ্ছে না।
সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ রামগোপাল যাদব তো আরেকধাপ এগিয়ে বলেছেন যে, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের হাতেই সরকারি কর্মীদের বেতন দেওয়ার টাকা নেই। শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি জাতীয় স্তরেই হতে পারে। খাদ্য নিগমের ভর্তুকি বাবদ ৪.২৭ লক্ষ কোটি টাকা দু’বছর ধরে বকেয়া পড়ে রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারেরই প্রায় দেউলিয়া অবস্থা।’’
জাতীয় স্তরের বৈঠকে রাজ্যের নাম উঠে এলেও ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ এর মত প্রকল্পের কারণেই ক্ষমতায় ফিরতে পেরেছে তৃণমূল এই নিয়ে দ্বিমত নেই কারো। কিন্তু এইসব জনমোহিনী কাজের ফলে যে চাপ পড়ছে রাজ্যের কোষাগারে সেই নিয়েই উদ্বিগ্ন কেন্দ্র সরকার। বিধানসভাতে পেশ হওয়া বর্তমান বাজেটে নতুন কোনো প্রকল্প না থাকলেও পুরনো প্রকল্পগুলিকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে যার জন্য প্রায় ৫.৮৬ লক্ষ কোটিতে পৌঁছাবে রাজ্যের ঋণ। জাতীয় উপদেষ্টা সংস্থা ইন্ডিয়া রেটিংস অ্যান্ড রিসার্চ এর তরফে জানা যাচ্ছে যে, এই বছর ৩ শতাংশ থাকবে রাজ্য সরকারের ঘাটতি। যা কিনা মঞ্জুর করা সর্বোচ্চ সীমায়।