পাঁচ মাস বয়সেই মাতৃহারা! কে পালন করেন? পুরনো কথা মনে করে আবেগঘন হলেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়

পৃথিবীতে মায়ের চেয়ে কাছের কেউই হয়না সন্তানের কাছে। কোনোকিছুই হতে পারেনা মায়ের বিকল্প। কিন্তু অনেকের কাছে মা না থাকলেও কৃষ্ণের যেমন যশোদা ছিল সেরকম কেও সামলে নেন তাকে। তেমনই অভিজ্ঞতা বিখ্যাত অভিনেতা পরাণ বন্দোপাধ্যায়ের। তার কাছে ‘মা’ শব্দটার অর্থ আর পাঁচজনের মত সাধারন নয়। খুব ছোট্ট বেলা থেকে পিসিকেই নিজের মায়ের স্থানে দেখে এসেছেন তিনি।

তাঁর বয়স যখন সবে পাঁচ তখনই মাতৃহারা হন তিনি। জ্ঞান হওয়ার আগেই মাকে চিরতরে হারিয়ে ফেলেন তিনি। সেই সময় এই দুধের শিশুর দেখাশোনা করে করবে এই নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন তাঁর বাবা। কোনো উপায় না দেখে নিজের পিসতুতো বোন কমলাদেবীর হাতে ছেলের দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হন তিনি। একটি ইন্টারভিউতে তিনি স্মৃতিচারণ করেন, ‘পাঁচ বছর বয়স থেকে পিসির স্তন্যপান করেই বড়ো হয়েছি। তিনিই আমার মা।’ পিসির বাড়িতে যেতেই ‘পরাণের ধন’ বলে বুকে টেনে নিয়েছিলেন দিদা। তারপর থেকেই বাবার দেওয়া নাম ‘মোহন’ পাল্টে হয়ে যায় ‘পরাণ’।

মজার কথা হলো এরপর থেকেই দিদাকে ‘দাদু’, পিসিকে ‘মা’ আর বাবাকে ‘কাকা’ ডাকতে শুরু করেন তিনি। পিসির ছেলে জয়দেব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই পেয়েছিলাম পিতৃস্নেহ, শাসন, ভালবাসা পেয়ে মানুষ হতে থাকেন। তাকাই বাবার মতো শ্রদ্ধা করতেন তিনি। বাবা মাঝে মাঝে এসে ঘুরতে নিয়ে যেতেন।

পিসিকে শুধু মা বলে ডাকাই নয়, মায়ের মতোই চিরকাল আদর শাসন পেয়ে এসেছেন অভিনেতা। কথায় কথায় তিনি নিজের ছোটোবেলার একটি ঘটনা তুলে ধরেন, ‘মা কে লুকিয়ে নারকেল খাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু মায়ের চোখ এড়ানো সহজ নয়। ঠিকই দেখতে পেয়েছিলেন তিনি‌। উঠোনে টেনে এনে জাঁতা ঘোরানোর লাঠি দিয়ে মেরেছিলেন শিরদাঁড়ার উপরে।’ দাদু দেখতে পেয়ে সে যাত্রায় বাঁচিয়ে নিয়ে যান। তিনি জানান, সেদিন রাত্রেই মা পিঠে গরম সেঁক দিয়েছিলেন।

তিনি জানান, ‘মা হওয়া সহজ, কিন্তু, মাতৃত্ব অর্জন করা সহজ নয়। পিসিমা কমলাদেবীর স্তনপান করেই আমি বড়ো হয়েছি। তিনিই আমার মা।’

➦ আপনার জন্য বিশেষ খবর

Back to top button