মায়ের দক্ষতাকে তুলে ধরে দুই বোন মিলে শুরু করেন শখের কাজ, আজ ছড়িয়েছে ১৫ কোটি টাকার ব্যবসা

মুম্বইঃ জীবনে বড় কিছু করতে প্রয়োজন সঠিক সিদ্ধান্তের। এবং এরই সাথে দরকার ধৈর্য্য এবং কঠিন পরিশ্রমের। এমনটাই করে দেখিয়েছেন মুম্বই-র এক মা এবং তার দুই মেয়ে। তাদের ছিল দৃঢ় সংকল্প যা পরবর্তীতে তারা বাস্তবিত করে দেখান। তাদের ব্যবসার শুরু হয়েছিল মুম্বইয়ের একটি ফ্ল্যাট থেকে। প্রথম বিনিয়োগ ছিল মাত্র ৫০ হাজার টাকা। এখন বার্ষিক টার্নওভার ১৫ কোটি টাকার!
বর্তমানে বিখ্যাত ভারতীয় এথনিক কোম্পানি (The Indian Ethnic Company) এর নতুন করে কোনো পরিচয়ের প্রয়োজন নেই। এই মুম্বই-ভিত্তিক কোম্পানিটির সহ প্রতিষ্ঠাতা লেখিনি দেশাই, তার মা এবং ছোট বোনের সাথে বাড়ির বেডরুম থেকে শুরু করেছিলেন ভারতীয় তাঁত এবং হস্তশিল্পের ব্যবসা। ২০১৬ সালে শুরু করেছিলেন তারা, এই ৬ বছরের মধ্যে সেই কোম্পানির চাহিদা হয়ে ওঠেছে গগনচুম্বি।
দ্য ইন্ডিয়ান এথনিক কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা লেখিনি তার এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, “আপনি আমার কথা বিশ্বাস নাও করতে পারেন, কিন্তু আমাকে কখনই দোকান থেকে রেডিমেড কিছু কিনতে হয়নি, কারণ আমার মা আমার বেশিরভাগ পোশাক ডিজাইন করেছেন।” শৈশব থেকে যৌবন অবধি কোনো জামা কাপড়ই তিনি কেনেননি বাজার থেকে। মুম্বই-য়ের লেখিনি দেশাই এবং হেতাল দেশাইয়ের মা শৈশব থেকেই বাড়িতে তাদের সমস্ত পোশাক ডিজাইন এবং প্রস্তুত করেছেন।
এখানে অবাক করার বিষয় হলো দুই বোন এবং মা দুজনের কারোরই টেক্সটাইলের মতো কোনো কোর্সে বড় কোনো ডিগ্রিই নেই। লেখিনি দেশাই এনএমআইএমএস থেকে মার্কেটিংয়ে MBA করেছেন। একই সঙ্গে হেতাল এমএস ইউনিভার্সিটি বরোদা থেকে হোম সায়েন্সে মাস্টার্স করেছেন। কিন্তু, ফ্যাশন এবং ভারতীয় ঐতিহ্যের প্রতি ঝোঁক সবসময় তাদের এই ব্যবসার দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করে। এরপর দুই বোনই মায়ের কর্মদক্ষতাকে তুলে ধরেন ব্যবসা রূপে।
এইসময় তাদের পোশাকের মার্কেটিং এ সোশ্যাল মিডিয়া খুব বড় ভূমিকা পালন করেছে। একটি চ্যানেলের সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “কেউ যদি আমাদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলগুলিতে যায় এবং পুরানো ছবি দেখে তবে তারা জানতে পারবে যে আমরা খুব পেশাদার পদ্ধতিতে আমাদের মার্কেটিং শুরু করিনি। এর একটি বড় কারণ ছিল তথ্যের অভাব। তা সত্ত্বেও, এক সন্ধ্যায় যখন একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি করার পর আমরা তাতে কিছু ছবি ক্লিক করে আপলোড করি, তখন আমরা গোয়া থেকে প্রথম অর্ডার পাই, তারপরে আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায় এবং আমরা কাজ শুরু করি।” তার সংস্থার বর্তমান জনপ্রিয়তা থেকেই বোঝা যায় যে সোশ্যাল মিডিয়াকে সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারলে ঠিক কতটা সাহায্য করতে পারে এই মাধ্যম।