সরকার বন্ধ করে দেয় ব্যবসা! সেখান থেকে সংগ্রাম করে আজ ভারতের সেরা ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন সুনীল

‘সাফল্য’ শব্দটা মাত্র তিনটি অক্ষরের হলেও এর ওজন অনেক। সফলতার শিখরে পৌঁছানো যেমন কষ্টকর তেমনই কষ্টকর সেই সফলতাকে বজায় রাখা। অনেক পরিশ্রম, ত্যাগ, কষ্ট থাকে এর পেছনে। সসচ্ছল পরিবারে জন্ম হলেই যে রাস্তা সহজ হবে এমনটা কিন্তু মোটেও নয়। এর জন্য লড়াই করতে হয় এবং নিজের জায়গা নিজে তৈরি করতে হয়। এমনই একটি উদাহরণ সুনীল ভারতী মিত্তল (Sunil Bharti Mittal)।

সুনীল ভারতী মিত্তল আজ ব্যবসায়ীমহলে এক পরিচিত নাম হলেও, দেশের অধিকাংশ মানুষই এই নামটার সঙ্গে পরিচিত নয়। তবে এয়ারটেল (Bharti Airtel) নামটি কিন্তু প্রায় সব মানুষই জানে। হ্যাঁ, এই এয়ারটেলেরই CEO হলেন সুনীল ভারতী মিত্তল। আজ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল নেটওয়ার্ক এটি। তবে শুধু দেশেই নয়, ভারতের বাইরে বহু দেশেই ছড়িয়ে আছে এয়ারটেলের নেটওয়ার্ক।

সুনীল আজ এই বৃহৎ কোম্পানির মালিক ঠিকই, কিন্তু এই জায়গায় পৌঁছাতে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। জন্মসূত্রে একটি বিত্তবান পরিবারে তার জন্ম হলেও নিজের লড়াইটা তিনি আর পাঁচটা মানুষের মতো রাস্তায় নেমেই লড়েছেন। বিনবার্গ স্কুল এবং গোয়ালিয়রের সিন্ধিয়া স্কুল থেকে পড়াশোনার পর ১৯৭৬ সালে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্য কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেন। যদিও সুনীলের বিশ্বাস, এইসব বড় স্কুল, কলেজ নয় জীবনের পাঠ তিনি শিখেছিলেন রাস্তাতে।

এই কারণে সুনীল স্নাতক শেষ করার পর সাইকেল এবং এর যন্ত্রাংশ তৈরির ব্যবসায় নামার সিদ্ধান্ত নেন এবং লুধিয়ানা থেকেই তার ব্যবসায়িক জীবন শুরু করেন। এই ব্যবসার জন্য ২০,০০০ টাকা ধার নেন তার বাবার কাছে। ব্যবসা চলাকালীন তার ঘনিষ্ঠতা বাড়ে হিরো সাইকেলের মালিক এবং প্রতিষ্ঠাতা ব্রিজমোহন লাল মুঞ্জালের সঙ্গে। জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সাহায্য পেয়েছিলেন তার থেকে।

সাইকেল ব্যবসা ঠিকঠাক চললেও ১৯৭৯ এর দিকে সুনীল বুঝতে পারেন যে এতে বিরাট বড় কিছু করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। সঙ্গে সঙ্গে মনস্থির করে ফেললেন এবং লুধিয়ানা ছেড়ে পাড়ি জমালেন মুম্বইয়ের উদ্দেশ্যে। সেখানে গিয়ে ১৯৮২ সালের দিকে জাপান থেকে আমদানি করা পোর্টেবল জেনারেটর বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন। সবে ব্যবসা দাঁড়াচ্ছিলো সেই সময় ভারত সরকার জেনারেটর আমদানি নিষিদ্ধ করে এবং জেনারেটর তৈরির লাইসেন্স দেয় দুটি স্থানীয় কোম্পানিকে।

হার না মেনে নিয়ে ১৯৮৬ সালে পুশ বাটন ফোন আমদানি করার সিদ্ধান্ত নেন সুনীল। তাইওয়ান থেকে আমদানি করা পুশ বোতাম ফোনের সাহায্যে ভারতে বিটেল ব্র্যান্ডের ফোন চালু করেন। এরপর শুরু হয় ফ্যাক্স মেশিন সহ অন্যান্য টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম তৈরির কাজ। কিন্তু তার ভাগ্যের চাকা বদলে যায় ১৯৯২ সালে শুরু হয় মোবাইল ফোনের প্রচলন।

mittal pic final

এই সুযোগটিকে লুফে নিয়ে তিনি ফরাসি কোম্পানি ভিভেন্দির সহযোগিতায় জোগাড় করে নেন দিল্লি ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সেলুলার লাইসেন্স। এবং শুরু হয় এয়ারটেল। মানুষের একমাত্র ভরসা হয়ে ওঠে এয়ারটেল। এই মুহূর্তে সুনীল মিত্তল প্রায় ১১.৬ বিলিয়ন ডলারের মালিক। এরসাথে তিনি ভারতের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি।

➦ আপনার জন্য বিশেষ খবর

Back to top button