মায়ের শ্লীলতাহানি হওয়ায় পুলিশ হওয়ার জিদ নেন বাস কন্ডাক্টরের মেয়ে, আজ তিনি IPS অফিসার

নয়া দিল্লিঃ ভারতে সিভিল সার্ভিসেস পরীক্ষাকে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত করা হয়। অনেকে বছরের কঠোর পরিশ্রমের পরেও এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারছেন না অনেকেই। কিন্তু আজ এক সাহসী আইপিএস অফিসার যার গল্প বলবো। যিনি শুধু এই কঠিন পরীক্ষা দেনই নি, পাসও করেছিলেন। এই গল্পের নায়িকা আইপিএস শালিনী অগ্নিহোত্রী।
হিমাচল প্রদেশের উনা জেলার থাথাল গ্রামে শালিনী অগ্নিহোত্রীর জন্ম। একজন অপরিচিত ব্যক্তির কাছে অশালীন আচরণের পর শালিনী তার পরিবারের সদস্যদের না জানিয়েই UPSC পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন। এবং প্রথম প্রচেষ্টাতেই পাস করে একজন আইপিএস অফিসার হয়েছেন। একজন বাস কন্ডাক্টরের মেয়ে শালিনী আজ একজন পুলিশ অফিসার হিসেবে পরিচিত যার নামে থরহরিকম্প অপরাধীরা । তার যোগ্যতার জন্য তাকে প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদাপূর্ণ ব্যাটন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তরফ থেকে রিভলবার দেওয়া হয়েছে।
প্রশিক্ষণের সময়ই শালিনী সেরা শিক্ষার্থীর পুরস্কার জিতেছেন এবং শুধু তাই নয় পেয়েছেন রাষ্ট্রপতির কাছে থেকেও পুরস্কার। কুলুতে তার পোস্টিং চলাকালীন, তিনি রাতারাতি লাইমলাইটে চলে এসেছিলেন। তিনি মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান চালিয়ে কোমর ভেঙে দিয়েছিলেন এই কালো ব্যবসার। তবে পুলিশ অফিসার হওয়ার ভাবনা ছোট্ট শালিনীর মাথায় আসে যখন সে তার মায়ের সাথে বাসে যাচ্ছিলেন। তখন শালিনীর বয়স খুবই কম। কিন্তু বাসে এমন কিছু ঘটে যা দেখে বদলে যান শালিনী। আসলে বাসে যাওয়ার সময় এক ব্যক্তি বারবার তার মায়ের পিঠে হাত রাখছিল, কিন্তু তার মা কিছুই করতে পারেননি সেদিন। শালিনী সেইসময় ছোট হলেও সব দেখেছিল এবং এই ঘটনা তার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। এরপরই সে পুলিশ অফিসার হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
শালিনীর পরিবারের সদস্যরা জানতো না যে, সে কলেজের পর ইউপিএসসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। 2011 সালের মে মাসে প্রথমবার UPSC পরীক্ষা দিয়েই শালিনী সর্বভারতীয় 285 তম স্থান অর্জন করে ভারতীয় পুলিশ পরিষেবা (আইপিএস) এর জন্য নির্বাচিত হন। শালিনী অগ্নিহোত্রীর বাবা রমেশ অগ্নিহোত্রী ছিলেন বাস কন্ডাক্টর। এতদসত্ত্বেও তিনি তার সন্তানদের লেখাপড়ায় কোনো কার্পণ্য করেননি। এর ফলও তিনি পেয়েছেন সেজন্য। আজ, শালিনী ছাড়াও, তার বড় মেয়ে একজন ডাক্তার এবং তার ছেলে এনডিএ পাস করে সেনাবাহিনীতে রয়েছে।