কুলি, মিস্ত্রি থেকে বাস কনডাক্টার! পাঁচ বছর বয়সেই মা হারা ছেলেটা আজ ৪০০ কোটির মালিক

কলকাতাঃ রজনীকান্ত একজন কিংবদন্তি, দক্ষিণ ভারত তথা ভারতের এক অন্যতম সুপারস্টার। তামিল চলচ্চিত্র জগতে তাঁকে সর্বশ্রেষ্ঠ হিসেবে গণ্য করা হয়। সুপারস্টার হওয়ার তাঁর যাত্রা খুব সহজ ছিল না। কর্ণাটক স্টেট ট্রানস্পোর্ট কর্পোরেশনে বাস কনডাক্টরের কাজও করেছেন তিনি। এই সময়ই তিনি বিভিন্ন মঞ্চস্থ নাটকে নিজের অভিনয়ের প্রতিভার আস্ফালন ঘটান। তিনি প্রমাণ করে দেন যে কঠোর পরিশ্রম আর দৃঢ় বিশ্বাস থাকলে কোনোকিছুই অসম্ভব নয়। এক বাস কন্ডাক্টর থেকে সুপারস্টারের যাত্রা সকলের জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়।
দক্ষিণী সুপারস্টার রজনীকান্তের জন্ম হয় ১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর। তৎকালীন মাইসোর সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা বেঙ্গালুরুতে একটি মারাঠি পরিবারে তাঁর জন্ম হয়। জন্মের সময় তাঁর নাম ছিল শিবাজি রাও গায়েকওয়াড়। মাত্র পাঁচ বছর বয়সেই তাঁর মা মারা গিয়েছিলেন। এই বয়স থেকেই শুরু হয় তাঁর জীবনযুদ্ধ। তিনি মোট চার ভাইবোন ছিলেন এবং রজনীকান্ত তাদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ছিলেন। মা মারা যাওয়ার পর ছন্নছাড়া হয়ে যায় সব কিছু। সংসারের টানাপড়েনে স্কুল পাশ করেই রজনীকান্ত চাকরির জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কখনও কুলিগিরি কখনও কাঠের মিস্ত্রি হয়ে কাজ করেছেন। তারপর বেঙ্গালুরু ট্রান্সপোর্ট ডিপার্টমেন্টের বাস কনডাক্টরের কাজ পান।
বাসে সিটি বাজিয়ে টিকিট সংগ্রহের ইউনিক স্টাইল যাত্রীদের আকর্ষণ করতো। এমনকি রজনীকান্তের এই ইউনিক স্টাইল মানুষজনের এতোটাই পছন্দ ছিলো যে শুধুমাত্র ঐ বাসটি ধরার জন্য মানুষজন অপেক্ষা করে থাকতো। এই সময় রজনীকান্ত কবি ও লেখক টপি মুনিয়াপ্পার পৌরাণিক কাহিনিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। তিনি কাজ ছেড়ে মাদ্রাজ ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। ফিল্ম ইনস্টিটিউটেই তামিল ফিল্ম পরিচালক কে বালাচন্দ্রের নজরে পড়ে যান তিনি। তার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে তিনি রজনীকান্তকে একটি ছবিতে কাজ করার সুযোগ দেন। এরপর ১৯৭৫ সালে কে বালাচন্দ্রের ফিল্ম ‘অপূর্বা রাগাঙ্গাল’এ প্রথম অভিনয় জগতে পদার্পণ।
এরপর আর থামতে হয়নি তাকে। এরপর তিনি প্রথমে ভিলেন, তারপর সাইড রোল এবং তারপর অবশেষে নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ২০১০ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের তথ্য অনুযায়ী, তখন তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৩৫৪ কোটি ৬৮ লাখ ১৫ হাজার রুপি। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে ১২ বছর পর তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ কত হতে পারে তা আপনিও ভাবতে পারবেন।