সন্তানকে বাঁচাতে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ২৫ মিনিট লড়াই! এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ‘মা”

বর্তমান দিনে সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে গোটা পৃথিবীর খবর আমাদের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। রোজ দিন এমন অনেক ঘটনাই আমাদের সামনে আসে যা দেখে রীতিমত শিহরিত হতে হয় আমাদের। সম্প্রতি এমনই এক চাঞ্চল্যকর খবর এলো মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) উমারিয়া (Umaria) জেলা থেকে। সূত্রের খবর, সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে নিজের সন্তানকে ছিনিয়ে এনেছেন এক মহিলা। যা দেখার পর স্তম্ভিত গোটা দুনিয়া।

নিজের সন্তানকে বাঁচাতে বাঘের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়তেও দুবার ভাবেননি ঐ মহিলা। এমনকি, একটা সময়ে বাঘটি তাঁকেও আহত করে ছেড়েছিল। তবে টানা ২৫ মিনিট লড়াই করার পর অবশেষে হার মানে ঐ বাঘটি। তবে এই দীর্ঘ লড়াইয়ে গুরুতর জখম হয়েছেন ঐ মা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয় উমারিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাকে পাঠানো হয় জবলপুরে।

প্রসঙ্গত, এই ঘটনাটি ঘটেছে বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের অন্তর্গত রোহানিয়া গ্রামে। সূত্রের খবর, গত রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ নিজের বছর দেড়েকের ছেলে রাজবীরকে নিয়ে কাজে বেরিয়েছিলেন অর্চনা চৌধুরী। সেখানেই ঝোঁপের আড়ালে ঘাপটি মেরে বসে ছিলো একটি বাঘ। হঠাৎ করেই বেড়া ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজবীরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে পড়লেও ছেলেকে বাঁচাতে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন অর্চনাও।

দীর্ঘ ২৫ মিনিট ধরে বাঘের সাথে লড়তে থাকেন তিনি। অবশেষে তার পরিত্রাহী চিৎকার শুনে গ্রামবাসীরা বিপদের আশঙ্কা করে ছুটে আসেন। লাঠিসোঁটা জোগাড় করে পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে। লোকজনের ভিড় দেখে অবশেষে হার মেনে নেয় বাঘটি। মা-ছেলেকে ছেড়ে পালিয়ে যায় বাঘটি। স্থানীয়ারা তড়িঘড়ি দুজনকেই চিকিৎসার জন্য কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে নিয়ে যান। সেখান থেকে অর্চনা এবং তার ছেলেকে জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, বাঘের থাবায় অর্চনার ঘাড় ভেঙে গিয়েছে।

এদিকে প্রতক্ষ্যদর্শীদের‌ জবানবন্দি থেকে জানা গেছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছে রীতিমত হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন তারা। তাদের মধ্যেও দুজনকে আক্রমণ করেছিলো বাঘটি। এরপর লোকজন বাড়তে থাকলে বাঘটি ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বান্ধবগড় টাইগার রিজার্ভের অংশ হওয়ায় সেখানে প্রায়ই হিংস্র প্রাণী চলে আসে। এমনকি, ক্ষুধার্ত থাকলে বাড়ি থেকে গবাদি পশুও টেনে নিয়ে চলে যায়।