৯৯ শতাংশ জল, ১ শতাংশ স্থল! ভারতের এই প্রতিবেশী দেশে প্রতি বছর ভ্রমন করতে যায় লাখ লাখ মানুষ

পৃথিবীর অন্যতম সুন্দর দেশ ভারতবর্ষের (India) থেকে একটু দূরেই রয়েছে এক দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ (Maldives)। শান্ত মনোরম পরিবেশ এই দ্বীপের বিশেষত্ব। এখানে জলের রং নীল আর বালির রং সাদা, আর তার তীর ঘেঁষে উঠে গেছে উঁচু উঁচু সব ভিলা। বিশ্বের প্রায় সব প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন হাজারের বেশি দ্বীপ বেষ্টিত দেশ এই মালদ্বীপে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো যে, এটি ভারতের কাছাকাছি অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও এখানে চিনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। যা ভারতের জন্য আসলেই একটা বড়ো সমস্যা।

মালদ্বীপের সমুদ্র সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। মালদ্বীপের নামটি মাথায় এলেই প্রথম যে ছবিটি মনে ভেসে ওঠে তা হল সুন্দর ওভারওয়াটার বিলাসবহুল ভিলা, সাদা বালি দিয়ে ঘেরা চমৎকার সৈকত এবং আন্ডার ওয়াটার স্পোর্টস। অবকাশ যাপনের জন্য মালদ্বীপ বিশ্বের অন্যতম কাঙ্ক্ষিত স্থান। স্কুবা ডাইভিং করতেও প্রচুর মানুষ মালদ্বীপে পৌঁছায়। জলের এতো নীচে ক্রীড়াভূমি তৈরি করার পরও বিজ্ঞানীদের বক্তব্য, এই জলের নীচের ইকোসিস্টেম সম্পর্কে এখনও অনেক কিছু শেখার বাকি আছে।

বিজ্ঞানীরা হাইটেক সাবমার্সিবল দিয়ে সাগর ফিল্টার করবেন : এখন মালদ্বীপ সরকার এবং ইউকে মেরিন রিসার্চ ইনস্টিটিউট নেকটন, অনাবিষ্কৃত এলাকায় সামুদ্রিক গবেষণা শুরু করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে নেকটন মালদ্বীপ মিশন যা ৪ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হবে। এর মধ্যে রয়েছে মালদ্বীপ এবং বিদেশের বিজ্ঞানীদের দল, যারা দুটি হাই-টেক সাবমারসিবল ব্যবহার করে ৩০ মিটারের নিচে ব্যাপক গবেষণা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে একটি সাবমার্সিবল সমুদ্রের তলদেশে ১০০০ মিটার গভীরে যেতে পারে। এটির লক্ষ্য মালদ্বীপের উপর বৈশ্বিক জলবায়ু সংকটের প্রভাব প্রশমিত করতে সহায়তা করা।

নেকটনের একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, মালদ্বীপের ৯৯ শতাংশ মহাসাগর। এটির মোট আয়তনের মাত্র এক শতাংশতেই মাটি রয়েছে, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে গড়ে ১.৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। এমন পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়লে মালদ্বীপের এই এক শতাংশ মাটি সমুদ্রে তলিয়ে যাবে। এমতাবস্থায় মালদ্বীপ সরকার সময় থাকতে থাকতে দ্বীপ উদ্ধারের পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছে।

মালদ্বীপ ভারতের রণনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ : ৯০ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত এই দ্বীপরাষ্ট্র এমন একটা জায়গায় অবস্থান করে যা ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কারণেই মালদ্বীপকে নিজের দিকে টানতে চায় ভারত সরকার। ভারতীয় দ্বীপ মিনিকয় মালদ্বীপের জলের সবচেয়ে কাছে (মাত্র ১০০ কিঃমিঃ) অবস্থিত। যা লাক্ষাদ্বীপের রাজধানী কাভারত্তি থেকে প্রায় ৪০০ কিমি দূরে। কেরালার দক্ষিণ প্রান্ত থেকে মালদ্বীপের এই দ্বীপের দূরত্ব মাত্র ৬০০ কিলোমিটার। এমন পরিস্থিতিতে মালদ্বীপে চীনের কবজা বাড়লে তা ভারতের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।

maldives

মালদ্বীপকে ঋণের ফাঁদে ফেলেছে চীন : বৈশ্বিক স্তরে ভারতের ক্রমবর্ধমান সুনাম দেখে ভীত চিন ভারত মহাসাগরে অবস্থিত অনেক দেশকে তার ঋণের জালে আটকে রেখেছে। এর মধ্যে মালদ্বীপও রয়েছে। মালদ্বীপে ক্ষমতা স্থানান্তরের আগে ২০১৬ সালে চিন সরকার ৪ মিলিয়ন ডলারের পরিবর্তে ফিনোলহু দ্বীপটি লিজ দেয়। দ্বীপটি মালদ্বীপের মূল ভূখণ্ডের ঠিক দূরে অবস্থিত। এমনকি এই দ্বীপের গোপনীয়তা বজায় রাখতে চিন বহিরাগতদের আগমনও নিষিদ্ধ করেছে।

➦ আপনার জন্য বিশেষ খবর

Back to top button