স্বাধীনতার ৭৬তম বছরে গোলামির শিকল ছিঁড়ল ভারত, মুছে দিল ব্রিটিশ দাসত্বের শেষ চিহ্ন

ভারতের (India) ৭৬ তম স্বাধীনতা দিবসের দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী হুংকার দিয়েছিলেন বহু বছরের গোলামিকে মুছে ফেলার। সারা দেশের মানুষকে আহ্বান দিয়েছিলেন কলোনিয়াল মেন্টালিটি ছেড়ে বেরিয়ে আসতে। মানুষ কতটা পেরেছে তা ঠিক বুঝতে না পারা গেলেও, মোদী যে কিছু করে দেখাবেন তা ঠিকই বুঝেছিল দেশবাসী। আর তিনি যা করলেন তাতে মুগ্ধ সারা দেশবাসী।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে গতকালের এই দিন। ২ সেপ্টেম্বর দুটি বিরাট বড় ইভেন্ট একইসাথে ঘটায় ভারতীয় নৌবাহিনীর সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছে সরকার। স্বাধীনতার মাত্র ৭৫ বছরের মধ্যেই ভারত তৈরি করেছে নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরী প্রথম বিমানবাহী রণতরী। প্রধানমন্ত্রী মোদীর হাত ধরে ভারতীয় নৌ বাহিনীতে যুক্ত হলো INS Vikrant। একই সাথে গোলামীর চিহ্ন ছাড়িয়ে নৌসেনার নয়া পতাকারও উদ্বোধন করেছেন তিনি।
ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকেই চলে আসা ভারতীয় নৌ বাহিনীর পতাকাতে ব্রিটিশদের ব্যাবহার করা সেন্ট জর্জ এর ক্রস রয়ে গেছিল এতদিন। মোদী সরকার সেটাকেই হঠিয়ে দিয়ে ভারতীয় নৌবাহিনীর পতাকাতে রেখেছে মহারাজ ছত্রপতি শিবাজির “রাজমুদ্রা”। নতুন পতাকা উদ্বোধনের সময় দৃপ্তকণ্ঠে মোদীজি বলেন যে, “এবার গোলামির চিহ্ন থেকে মুক্তি পেল ভারতীয় নৌসেনার পতাকা।’’
এর আগে নৌবাহিনী যে পতাকা ব্যাবহার করত সেখানে পতাকাটি অনেকটাই ইংল্যান্ডের নৌসেনার ঢঙের ছিল। জাতীয় পতাকার পাশে ছিল লাল রঙের একটি বড়সড় ক্রশ। আর সেখানেই মাঝখানে ভারতের অশোক স্তম্ভকে রাখা হয়েছিল। স্বাধীনতার পূর্বে ব্রিটিশ শাসনাধীনে ওই একই পতাকা ব্যাবহার করা হতো। পার্থক্য ছিল এই যে, ব্রিটিশ শাসনে ভারতীয় পতাকার জায়গাতে থাকতো “ইউনিয়ন জ্যাক”।
এবার নৌ-সেনার নয়া পতাকাতে মুছে দেওয়া হয়েছে জর্জ ক্রশকে। পরিবর্তে সেখানে ফাদার অফ ইন্ডিয়ান নেভি ‘শিবাজী মহারাজের’ মুদ্রাকে স্থান দেওয়া হয়েছে। তার ওপরেই রাখা হয়েছে নৌসেনার এমব্লেম। আর সেখানে দেবনাগরী হরফে আরো যুক্ত করা হয়েছে ভারতীয় নৌসেনার প্রতীক এবং স্লোগান “শ নৌ বরুণ”।
প্রসঙ্গত এর আগে ২০০১ সালে অটলবিহারী বাজপেয়ী বদলে ছিলেন নৌসেনার পতাকা, সেখানে জর্জ ক্রশকে পতাকা থেকে বের করেছিলেন তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে ২০০৪ সালে কংগ্রেস সরকার আবারো ফিরিয়ে নিয়ে আসে সেই আগের পতাকা। ১৯৫০ সাল থেকে মোট চার বার রং এবং পতাকার ধাঁচ পরিবর্তন হয়েছে ভারতীয় নৌসেনার।