বাবা চা বিক্রেতা, টাকার অভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়া ছেলে Youtube দেখে NEET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ

ইচ্ছাশক্তি থাকলে যে সমস্ত কিছুই করা সম্ভব সেটা করে দেখিয়েছেন উড়িষ্যার এক যুবক। স্বপ্ন দেখেছিল ছেলেটা, আর সেটাকে বাস্তব করে দেখিয়েছে শেষমেষ। কাজ করতো বাবার চায়ের স্টলে। সেখানে চা খেতে আসা ডাক্তারদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে সে আজ ডাক্তার হয়েছে।
ডাক্তাররা তার বাবার দোকানে চা খেতে আসতেন। সেখান থেকেই ওই যুবক স্বপ্ন দেখে ডাক্তার হওয়ার। আর আজ সে নিজেই ডাক্তার হওয়ার কঠিন পরীক্ষা NEET এ উত্তীর্ণ হয়েছে। বড় কথা হলো যে, এত পরিশ্রমের ব্যাপারে ঘুণাক্ষরেও জানতে দেয়নি তার পরিবারকে।
তার বাবা চা বিক্রি করেন হাসপাতালের বাইরে। তারও স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ডাক্তার করার, কিন্তু সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় টাকা। টাকার অভাবে ছেলেকে পরীক্ষার জন্য কোচিং সেন্টারে ভর্তি করানো তাই সম্ভব হয়ে ওঠেনি। কিন্তু ছেলে বাবার সেই স্বপ্নের কথা জানতো, আর সে হল ছাড়ার পাত্র নয়। তাই কোচিং সেন্টার এর সাহায্য ছাড়াই নিজের মত পড়াশোনা করে Youtube এর সাহায্যে আজ NEET পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয়েছে।
যার কথা বলছি সে, ওড়িশার ফুলবনির মাস্টারপাড়ার বাসিন্দা 22 বছর বয়সী সুরজ কুমার বেহেরা। সে এখন তার বাবার স্বপ্ন পূরণ করতে পারায় বেশ খুশি হয়েছে। NEET পরীক্ষাতে 720 নাম্বারের মধ্যে সে 635 নাম্বার পেয়ে 8056 তম স্থান দখল করেছেন। নিজের আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এই যুবক যা করে দেখিয়েছে তা অনবদ্য।
সুরজ কুমার বেহেরার বাবা শিবা শঙ্কর জানিয়েছেন যে, নিজের আর্থিক অবস্থার মধ্যেই সন্তানদের সর্বোত্তম শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। তার ছোট ছেলে এখন ভিএসএসইউটি, বুর্লাতে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ছে। কিন্তু তিনি কখনো সুরাজকে নিরুৎসাহিত করেননি। পড়াশুনার পাশাপাশি সুরাজ তাকে চায়ের দোকানেও সাহায্য করতেন।
তবে এসবের মধ্যেও সুরজের মা আগামী সময়ের খরচ নিয়ে খুবই চিন্তিত। পাঁচ বছরের শিক্ষার খরচ কীভাবে যোগাবেন তাই নিয়ে শঙ্কায় তারা। এমনকি তারা আক্ষেপ করে সুরাজের পরবর্তী পড়াশোনার খরচ মেটানোর মতো তাদের নিজের বাড়ি বা জমি নেই যা দিয়ে অর্থ সংস্থান হবে।