দু’বার ব্যর্থ, পরীক্ষার আগে মৃত্যু মায়ের! অবশেষে জয়, UPSC-তে ৩৬ র্যাঙ্ক অর্জন বাঁকুড়ার মেয়ের

বর্তমান দিনে মানুষের মধ্যে একাগ্রতা কমেছে। বেড়েছে চঞ্চলতা। মানুষ আজকাল সামান্য কিছু নিয়েই প্রচন্ড অন্যমনস্ক হয়ে পড়ে। কিন্তু সফলতা পাওয়ার জন্য প্রয়োজন হয় ধৈর্য্য এবং জেদের। তাই সাফল্য এবং অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে আমরা আমাদের সাফল্যের গল্পের সিরিজ চালাই। আজ সেখানে আমরা জানাবো কিভাবে পরিশ্রম এবং একাগ্রতার ফলস্বরূপ বাঁকুড়ার (Bankura) অজ পাড়াগাঁয়ের মেয়ে অর্পিতা সিংহ UPSC এর জিও সাইন্স এ ৩৬ তম স্থান অধিকার করেছেন।
প্রাথমিক পড়াশোনা চাপাতরা সরস্বতী শিশু মন্দির থেকে। এরপর সেন্দ্রা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ করে বাঁকুড়া মিশন গার্লস থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন অর্পিতা। বাড়ির লোক জানান, একদম ছোটো বয়স থেকেই বেশ মেধাবী ছিলেন অর্পিতা। কিন্তু তাইবলে UPSC এর জার্নিটা তারজন্য মোটেই সহজ ছিল না।
জীবনে ঝড় অনেক এসেছে। তবে সবচেয়ে বড় ঝড়টা ছিল পরীক্ষার মাস ৬ আগেই তার মা বন্দনা সিংহর মারা যাওয়া। বড় দিদি এবং বাবা সামলে রাখেন তাকে। কিন্তু অর্পিতা এগিয়ে যান নিজের স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে। ২০২০ এবং ২০২১ এ এই পরীক্ষায় বসেন তিনি। কিন্ত দু’বারই ব্যর্থ হতে হয় অর্পিতাকে।
ব্যর্থ হয়েছেন বটে, কিন্তু হাল ছাড়েননি। আর তারপর এইবছর আসে সেই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য! ২০২২ সালে ইউপিএসসি জিও সাইন্সে গোটা ভারতবর্ষে ৩৬ তম স্থান দখল করেন তিনি। অর্পিতা প্রমাণ করে দিয়েছেন যে, ডাক্তার অথবা ইঞ্জিনিয়ার ছাড়াও যে কোন অফবিট সাবজেক্ট নিয়েও সফলতা পাওয়া যায়। এবিষয়ে জানিয়ে রাখি, আয়রন ম্যান তার খুবই পছন্দের। সেই স্কেচ রয়েছে তার পড়ার টেবিলে।
তবে অর্পিতা এক রেকর্ড গড়েছেন। গ্রাম থেকে উঠে গিয়ে সারাভারতে ৩৬ তম স্থান হাসিল করতে পেরেছেন। তার চলার পথ ছিল কণ্টকময়, কিন্তু সেই কারণে পিছিয়ে যাননি তিনি। লড়াই করেছেন, আর সেই লড়াইয়ে হেরেছেন কিন্তু শেষমেষ যুদ্ধে বিজয়ী হয়ে দেখিয়েছেন। অর্পিতার এই সাফল্য এবার অনুপ্রেরণা জোগাবে গ্রাম বাংলার শত শত ছেলেমেয়েকে।