স্বামী ব্যাঙ্কার, স্ত্রী CA, দুজনেই চাকরি ছেড়ে শুরু করেন অভিনব চাষ! এখন বার্ষিক আয় ১ কোটি টাকা

খুব কম মানুষই আছেন যারা নিজেদের ভালো চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজের মতো একটা অনিশ্চিত জীবিকা বেছে নেওয়ার সাহস দেখায়। ললিত এবং খুশবু এমনই একজন দম্পত্তি। তারা যে শুধু সাহস দেখিয়েছেন তাই নয়, তারা নজিরবিহীন সাফল্য অর্জন করে দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে। কিন্তু কীভাবে করলেন এতোকিছু?
যোধপুর নিবাসী ললতি এমবিএ করার পর একটি নামকরা ব্যাঙ্কে চাকরি করতেন। তার স্ত্রী ছিলেন চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। কিন্তু হঠাৎই একদিন চাকরি ছেড়ে কৃষিকাজে মনোনিবেশ করেন দুজন। এবং পুরো দমে জৈব চাষ শুরু করেন তারা।
আর অবাক করা বিষয় হলো এই যে, তারা শুধু চাষ করেছেন তাই নয়, তাকে একটি লাভজনক ব্যবসাতেও পরিণত করেছেন। এবং বর্তমানে রাজস্থানের সমস্ত কৃষক তাদের তৈরি প্যাটার্ন অনুসরণ করে ভাল মুনাফা অর্জন করতে চায়।
ললিত প্রথমে শুধু জৈব চাষের কথা শুনেছিলেন, চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে কিছুই জানতেননা। তাই তিনি যখন এই ক্ষেত্রে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি জৈব চাষের উপর সম্পূর্ণ গবেষণা করেন। ললিতের জানিয়েছেন যে, তিনি যখন এমবিএ করতে পুনে গিয়েছিলেন, তিনি সেখানে গ্রিন হাউস এবং পলিহাউসের বিষয়টি চাক্ষুষ দেখেছিলেন।
ললিতের কথায়, “তারপর ভাবলাম আমারও যদি এমন একটা নার্সারি থাকত। নিজের জমিতে গ্রিনহাউস ও পলিহাউস তৈরি করে চমৎকার নার্সারি শুরু করতাম। যেখানে অর্গানিক ফল ও সবজি চাষ করা হবে।” ললিত বলেন, পলিহাউসের জন্য তিনি তার বাবার কাছে পৈতৃক জমি চেয়েছিলেন। প্রথম দিকে বাবা রাজি হননি, তারপর ধীরে ধীরে তিনিও রাজি হন। প্রথমে মাত্র ১ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন তিনি। আজ তার বার্ষিক আয় ১ কোটির বেশি।
এদিকে ললিতের স্ত্রী খুশবু পেশায় একজন সিএ। এই সব তার কাছে সম্পূর্ণ নতুন ছিল। তবে ধীরে ধীরে এখন পুরো ব্যবসা সামলাচ্ছেন খুশবু। তার কথায়, “রাজস্থানের মতো শুষ্ক রাজ্যে কৃষকদের চাষের নতুন ধারণা দেওয়া এবং তাদের লাভের ব্যবস্থা করাই আমাদের লক্ষ্য। এখন পর্যন্ত আমরা আরও ৬০ হাজার কৃষককে কৃষিকাজের গুণ শিখিয়েছি।”
ললিতের থেকেই জানা গেছে যে, “রাজস্থানে জলের অভাব মাঝে মাঝে কৃষকদের মনোবল ভেঙে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে কম জলে বেশি ফলন পাওয়া যায়, কোন ফসল সঠিক হয়, কীভাবে জৈব চাষ থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়, সেইসব নিয়েই টিপস দিয়ে থাকি সবাইকে। আর এই কাজে এখন আমরা দুজনেই রাজস্থানে ঘুরে বেড়াই এবং অন্য কৃষকদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করি।”