কিছুদিন আগে সারা বাংলাদেশ (Bangladesh) তোলপাড় হয় অধ্যাপিকা এবং ছাত্রের বিয়েতে। অসমবয়সী এই দুজনার প্রেমে উত্তাল হয় সারা সোশ্যাল মিডিয়া। অনেক স্বপ্ন বুকে নিয়ে ঘর বেঁধেছিলেন দুজনায়। আশা ছিল অনেক, কিন্তু শেষ পরিণতি হলো চূড়ান্ত নির্মম। রবিবার সকালে উদ্ধার হয় ওই অধ্যাপিকার মরদেহ।
সোশ্যাল মিডিয়াতে উত্তাল এই প্রেমের গল্পের যে এমন ভয়ানক পরিণতি হবে সেটা বোধ হয় খুব কমজনই আঁচ করতে পেরেছিলেন। এদিন নাটোরের বলারিপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়ি থেকে শিক্ষিকার দেহ উদ্ধার করে বাংলাদেশ পুলিশ। মৃতা শিক্ষিকা ছিলেন বাংলাদেশের খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক।
অধ্যাপিকা খাইরুন নাহার ৪০ এর দোরগোড়ায় গিয়ে বিয়ে করেছিলেন ২২ বছর বয়সী মামুনকে। মামুন ছিলেন নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রথম আলাপ হয় ফেসবুকের সূত্রে। এরপর ধীরে ধীরে একে অপরের প্রেমে মজে ঘরবাঁধার স্বপ্ন নিয়ে বিয়ে করেন তারা। প্রথমে এই কথা লুকিয়ে রাখলেও পরে জানাজানি হয়েই যায়। পুলিশ এই মৃত্যুতে আটক করেছে তার স্বামী মামুনকেও।
জুলাই মাসে তাদের এই প্রেমের কথা প্রকাশ্যে আসতে, মামুনের পরিবার এই সম্পর্ক মেনে নিলেও শিক্ষিকার পরিবার কোনোভাবেই এই সম্পর্কের কথা মানতে চায়নি। মৃতা শিক্ষিকা এর আগে রাজশাহীতে বিয়ে করলেও সেই বিয়ে টেকেনি বেশিদিন। তার একটি সন্তানও রয়েছে প্রথম পক্ষের তরফ থেকে। কিন্তু তিনি সেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে এসে ঘর বাঁধেন ২২ বছর বয়সী মামুনের সাথে। প্রসঙ্গত মামুনের বাড়ি ওই একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে।
বিয়ের কথা জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়াতে দারুণ উত্তেজনার রেশ ছড়ায়। কিন্তু সমস্ত কিছুকে পাশ কাটিয়ে দুজনের প্রেম শেষপর্যন্ত বাঁচিয়ে রাখে দুজনকে। বিষয়টা ভাইরাল হলে শিক্ষিকা নিজেই জানান যে, মাঝেমধ্যেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়তেন তিনি, কিন্তু মামুন তাকে পাশে থাকার উৎসাহ দিয়ে যান সর্বক্ষণ। তার মতে মন্তব্য কখনও গন্তব্য ঠেকাতে পারে না’। কে কি বলল সেই সব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজেদের মতো সংসার গুছিয়ে নিয়ে জীবন শুরু করার কথাও বলেছিলেন মামুন।
তবে সেই সুখ যে বেশীদিন সইবে না তাদের কপালে এটা বোধ হয় ভাবতেও পারেননি তারা। ফেসবুক আলাপের প্রেম বিয়ের পূর্ণতা পেলেও শেষ হল মৃত্যুতে। অনেকেই অবশ্য বলতে থাকেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ার তীব্র সমালোচনা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছেন ওই শিক্ষিকা। তবে এই বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এই বিয়ে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে নানা আলোচনা এবং সমালোচনা হয়। এটা মানসিক চাপের কারণে আত্মহত্যা কি না, আমরা তদন্ত করছি।“