সত্যজিৎ রায়ের অমরকীর্তি সোনার কেল্লা আমরা সবাই দেখেছি বা না দেখলেও একবার পড়েছি। ফেলুদার সেই অ্যাডভেঞ্চারের গল্পে প্রথমবার রাজস্থানের জয়সলমীর শহরের কথা জানতে পারা যায়। অনেক অ্যাডভেঞ্চার, রহস্যে রোমাঞ্চে ঘেরা থাকলেও কোনোদিন কি ভাবতে পেরেছেন এই রুক্ষ শুষ্ক মরুশহরে জলজ প্রাণীর দেহ পাওয়া যাবে।
শুনতে অবাক লাগলেও এটা কিন্তু সত্যি। GSI এর চার বিজ্ঞানী ত্রিপর্ণা ঘোষ, দেবাশিস ভট্টাচার্য, কৃষ্ণ কুমার ও প্রজ্ঞা পাণ্ডে এই আবিষ্কার করেছেন। তারা মরু শহর জয়সলমীরে আবিষ্কার করেছেন দাঁতালো হাঙর। এই প্রত্নতাত্বিক আবিষ্কার দেখে অনেকেই হতবাক হয়েছেন।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই হাঙর মাছের নাম দিয়েছেন ‘স্ট্রোফোডাসজয়সলমীরেনসিস’। যদিও পুরো দেহ পাওয়া যায়নি। মিলেছে কেবল দাঁত। আর সেই রাক্ষুসে দাঁতের পরীক্ষা করে পাওয়া গিয়েছে যে, এগুলি জুরাসিক যুগের প্রথম পর্যায়ের সময়কার। সেইসময় হাইবোডন্ট হাঙর ঘুরে বেড়াত এই পৃথিবীর বুকে।
এই শ্রেণীর হাঙর এক বিশেষ বৈশিষ্ট্যের সাথে আসে। এই হাঙরদের দাঁতের ধরন কিছুটা আলাদা ছিল। আর সেই একই ধরনের দাঁত উদ্ধার হয়েছে জয়সলমীর থেকে। এই নয়া আবিষ্কারের ফলে প্রাণীগুলোর বাসস্থান নিয়ে এক নয়া প্রশ্নচিহ্ন তুলেছে।
জুরাসিক যুগের একদম শুরুতে সমুদ্রের স্বচ্ছ জলে বাস ছিল এই হাইবোডন্ট শ্রেণীর হাঙরদের। আজ থেকে ১৬০-১৬৮ মিলিয়ন বছর আগে তারা পৃথিবীর বুকে ঘুরে বেড়াত। কিন্তু যুগ শেষ হওয়ার সময় থেকে বিলুপ্ত হতে থাকে প্রাণীগুলো।
এই প্রাণীগুলো বিলুপ্ত হয়ে যায় আজ থেকে ৬৫ মিলিয়ন বছর আগে ক্রেটেসিয়াস যুগে। কিন্ত পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেলেও তাদের জীবাশ্ম পড়ে থেকে যায়। এখানে দেখার বিষয় এই যে, জলজ প্রাণীর জীবাশ্ম কিভাবে জয়সলমীরের মতো মরুশহরে পাওয়া যায়।