ভারতর প্রথম বুলেট ট্রেনকে রক্ষা করবে অ্যানিমোমিটার, কী এটা জানেন?

ভারতের বুক চিড়ে ছুটবে বুলেট ট্রেন। আর এই দৃশ্য দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন দেশবাসী। কবে এই ট্রেন চালানো হবে সেদিকে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে রয়েছেন সকলে। ইতিমধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো প্রিমিয়াম এবং হাইস্পিড ট্রেন চালাচ্ছে রেল। এই ট্রেনের জনপ্রিয়তা দিন দিন সাধারণের মধ্যে বেড়ে চলেছে।

এক অনুষ্ঠানে রেলমন্ত্রী জানান, ‘আর মাত্র ২ বছর পর দেশে বাস্তবে রূপ নেবে বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন। অর্থাৎ ২০২৬ সালের মধ্যেই দেশবাসী বুলেট ট্রেনে উঠতে পারবেন। আমাদের প্রস্তুতি খুব দ্রুত চলছে এবং ২০২৬ সালে বুলেট ট্রেন চালানো হবে।’ মুম্বই ও আহমেদাবাদের মধ্যে মধ্যে প্রথম চাকা গড়াবে বুলেট ট্রেনের। ভারতের প্রথম বুলেট ট্রেনের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এক্স-এ এই প্রকল্প সম্পর্কে নতুন তথ্য শেয়ার করেন। টুইটে বলা হয়, বুলেট ট্রেনের ৫০৮ কিলোমিটার দীর্ঘ রুটের ১৪টি জায়গায় অ্যানিমোমিটার বসানো হবে। অ্যানিমোমিটার এমন একটি ডিভাইস যা হাওয়ার গতি পরিমাপ করে। এতে বুলেট ট্রেনের নিরাপত্তা বাড়বে।

   

কিন্তু এই অ্যানিমোমিটার জিনিসটা কী আসলে সে সম্পর্কে কিছু জানেন? তাহলে ঝটপট পড়ে ফেলুন আজকের এই প্রতিবেদনটি। অ্যানিমোমিটার বসানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল হাই স্পিড রেল কর্পোরেশন লিমিটেডকে। বুলেট ট্রেন প্রকল্পের জন্য বিশেষভাবে এনএইচএসআরসিএল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি রেল মন্ত্রক, গুজরাট সরকার এবং মহারাষ্ট্র সরকারের একটি অংশীদারিত্ব। এনএইচএসআরসিএল জানিয়েছে, ১৪টি অ্যানিমোমিটারের মধ্যে ৫টি বসানো হবে মহারাষ্ট্রে এবং ৯টি গুজরাটে।

এই অ্যানিমোমিটার বুলেট ট্রেনকে গাইড করবে। রেল জানাচ্ছে, মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন করিডর দেশের পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলবর্তী এলাকার মধ্য দিয়ে যাবে। বলা হচ্ছে, এখানকার কোনো কোনো এলাকায় হাওয়ার গতিবেগ খুব দ্রুত। মাঝে মাঝে এত দ্রুত হয়ে যায় যে ভায়াডাক্টে ট্রেন চালানো নিরাপদ হয় না। একটি ভায়াডাক্ট একটি সেতুর মতো কাঠামো যা দুটি স্তম্ভকে সংযুক্ত করে। কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলেন, বুলেট ট্রেন প্রকল্পে মোট ১৫৩ কিলোমিটার সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। এই সেতুগুলিতে বুলেট ট্রেনের নিরাপদ পরিচালনার জন্য অ্যানিমোমিটারগুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে প্রমাণিত হবে।

যাইহোক, অ্যানিমোমিটার হ’ল এক ধরণের দুর্যোগ প্রশমন ব্যবস্থা যা প্রতি ঘন্টা ০-২৫২ কিলোমিটার থেকে চলমান বাতাসের রিয়েল-টাইম ডেটা সংগ্রহ করে। বিশেষ বিষয় হল এটি ০ থেকে ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত শক্তিশালী বাতাস পর্যবেক্ষণ করে। এই কারণগুলির জন্য প্রবল বাতাস এবং ঝড়ের মোকাবিলা করার জন্য, এনএইচএসআরসিএল এমন ১৪ টি জায়গা চিহ্নিত করেছে যেখানে ভায়াডাক্টে অ্যানিমোমিটার ইনস্টল করা হবে।

হাওয়ার গতিবেগ যদি ৭২ থেকে ১৩০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টার মধ্যে থাকে তবে ট্রেন সেই অনুযায়ী তার গতি সামঞ্জস্য করবে। অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টার (ওসিসি) বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত অ্যানিমোমিটারের মাধ্যমে বাতাসের গতিবেগ পর্যবেক্ষণ করবে।

 

বিগত ৭ বছর ধরে সাংবাদিকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত। ডিজিটাল মিডিয়ায় সাবলীল। লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার নেশা।

সম্পর্কিত খবর