পিঠ থেকে গিয়েছে দেওয়ালে! এবার ঋণ শোধ নিয়ে ভারতের কাছে কাতর আর্জি মলদ্বীপের

দীর্ঘ কিছু সময় ধরে ভারত ও দীপরাষ্ট্র মালদ্বীপের মধ্যে যেন একটা ঠান্ডা লড়াই চলছে দুই দেশই একে অপরের সমালোচনায় যেন কার্যত লিপ্ত হয়েছিল। সম্প্রতি তবে আচমকাই যেন ছন্দপতন ঘটলো। বলা ভালো ভারতের প্রতি কিছুটা সুর নরম করতে দেখা গেল মালে সরকারকে। প্রশ্ন উঠছে, চাপে পড়ে কি ভারতের প্রতি সুর নরম করল মইজ্জু সরকার?

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মইজ্জু ভারতবিরোধী নেতা হিসেবেই আন্তর্জাতিক মহলে বেশি পরিচিত। যদিও এবার সমঝোতামূলক অবস্থান নিয়ে তাঁকে বলতে শোনা গেল, ভারত তার দেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেই থাকবে সর্বদা। এখন আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন যে আচমকা কী এমন হল? তাহলে আপনাদের জানিয়ে রাখি, নয়া দিল্লি থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল দ্বীপরাষ্ট্র মালদ্বীপ। ফলে এখন দেশটিকে ঋণ পরিশোধের জন্য নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানালেন মইজ্জু। গত বছর শেষে ভারতের কাছে মালদ্বীপের পাওনা ছিল ৪০ কোটি ৯ লাখ মার্কিন ডলার। গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকেই চীনপন্থী মালদ্বীপের নেতা মইজ্জু ভারতের প্রতি কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন এবং ১০ মে’র মধ্যে ভারতীয় সেনাদের তার দেশ থেকে ফেরত পাঠানোর দাবি জানিয়েছিলেন।

   

অন্যদিকে ভারতও সেই দাবি মেনে নিয়ে ধীরে ধীরে সেনা প্রত্যাহার করতে শুরু করেছিল ভারত। তবে এখন ভারতের সামনে কাকুতি মিনতি করতে দেখা গেল মালদ্বীপকে। দায়িত্ব গ্রহণের পর বৃহস্পতিবার স্থানীয় গণমাধ্যমকে দেওয়া প্রথম সাক্ষাৎকারে মইজ্জু বলেন, মালদ্বীপকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং ‘বৃহত্তম সংখ্যক প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করেছে। মইজ্জু বলেছেন, ভারত মালদ্বীপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেই থাকবে এবং এতে কোনো সন্দেহ নেই। ভারত গত কয়েক বছর ধরে দুটি হেলিকপ্টার এবং একটি ডর্নিয়ার বিমানের মাধ্যমে মালদ্বীপের জনগণকে মানবিক ও চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে আসছে।

মইজ্জু মালদ্বীপের জন্য সরকার কর্তৃক গৃহীত বিশাল ঋণ পরিশোধে ঋণ ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানান। মইজ্জু বলেন, ‘মালদ্বীপ ভারতের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছে।  মালদ্বীপের অর্থনৈতিক সক্ষমতা অনুযায়ী ঋণ পরিশোধের বিকল্প খুঁজতে আমরা বর্তমানে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি’। সম্প্রতি মালদ্বীপে ভারতীয় সেনার উপস্থিতি নিয়ে ভারতের সঙ্গে বিতর্কের একমাত্র বিষয় বলে উল্লেখ করে মুইজু বলেন, ভারতও এই সত্য মেনে নিয়েছে এবং সেনা প্রত্যাহার করতে সম্মত হয়েছে। এক দেশ অন্য দেশকে যে সাহায্য দেয়, তা প্রত্যাখ্যান করা বা উপেক্ষা করা ঠিক নয়। তিনি দাবি করেন, তিনি এমন কোনো পদক্ষেপ নেননি বা এমন কোনো বিবৃতি দেননি, যাতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। মইজ্জু বলেন, তার সরকার মালদ্বীপে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সমস্যা সমাধানের জন্য আলোচনার মাধ্যমে একটি বিচক্ষণ সমাধান খুঁজে বের করার জন্য কাজ করেছে।

বিগত ৭ বছর ধরে সাংবাদিকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত। ডিজিটাল মিডিয়ায় সাবলীল। লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার নেশা।

সম্পর্কিত খবর