সিনেমা পিছু নিতেন ৪ লাখ, তবুও রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করতে হয় উত্তম কুমারকে! কেন জানেন?

মহানায়ক উত্তম কুমার…নামটা শুনলেই এখনও অবধি সকলের মাথায় প্রথমেই আসে এক সদাহাস্য মানুষটির চেহারা। ৫০, ৬০-এর দশকে একের পর এক সিনেমায় চুটিয়ে অভিনয় করা উত্তম কুমারকে মানুষ কিন্তু আজও ভোলেননি। বিশেষ করে পুরনো দিনের মানুষরা। এখনও অবধি টিভির পর্দায় যখন তাঁর গান বা সিনেমা দেখানো হয় সকলেই সেদিকে তাকান। তবে আপনি কি জানেন যে একসময় তাঁকেও কলকাতার রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করতে হয়েছিল? কী শুনে চমকে গেলেন তো? কিন্তু এটাই সত্যি।

এখন সকলের নজর আটকে রয়েছে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের একটি সিনেমার ওপর। আর সেটি হল ‘অতি উত্তম।’ এই সিনেমার মাধ্যমে নতুন করে কামব্যাক করছেন মহানায়ক উত্তম কুমার! না না, সত্যি সত্যি নয়, আসলে এই সিনেমাটিতে উত্তম কুমারকে বেশ কায়েদা করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন সৃজিত। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন কীভাবে? এই ছবিতে টেকনোলজির সাহায্যে উত্তমকুমারকে ফিরিয়ে এনেছেন সৃজিত। উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে উত্তমকুমারের পুরনো ছবি থেকে ক্লিপিংস কেটে-কেটে তিনি ব্যবহার করেছেন ছবিতে। ফলে এই সিনেমা নিয়ে চর্চার শেষ নেই।

   

এদিকে এই সিনেমা প্রসঙ্গে বড় মন্তব্য করেছেন বর্ষীয়ান বাঙালি অভিনেত্রী ও ‘চারুলতা’ খ্যাত মাধবী মুখোপাধ্যায়। এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী বলেছেন, “উত্তমকুমারকে সকলে এক দারুণ অভিনেতা এবং মহানায়ক-সুপারস্টার হিসেবেই চেনেন। কিন্তু তিনি যে কত বড় মনের মানুষ ছিলেন, তা কেউ জানেনই না। তিনি নিজেও চিনতে দেননি হয়তো। আমার কাছে উত্তমদা মহানায়কের পাশাপাশি একজন মানবিক মানুষ।”

রাস্তায় ভিক্ষা করেছিলেন উত্তম কুমার

এরপরেই তিনি এমন এক তথ্য দেন যা শোনার জন্য হয়তো কেউ তৈরি ছিলেন না। মাধবী জানিয়েছেন, উত্তমকুমার এমন এক ব্যক্তি, যিনি সেই সময় বন্যাত্রাণে সাহায্য করতে গিয়ে টালিগঞ্জের রাস্তায় ভিক্ষে পর্যন্ত করেছেন। প্রতি ছবি পিছু ২ থেকে ৪ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন মহানায়ক উত্তমকুমার। সেক্ষেত্রে এত বড় মাপের অভিনেতার কী এমন দরকার পড়েছিল যে রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করেছিলেন?

কলকাতায় বন্যা

৬০-এর দশকে যখন কলকাতায় ভয়াবহ বন্যা হয় সেই সময়ে উত্তম কুমার রাস্তায় নেমে ভিক্ষা অবধি করেছেন। মাধবী জানান, “একবার ভীষণ বন্যা হয়। সেই সময় চারদিকে হাহাকার। ত্রাণের কাজ চলছে। বিষয়টায় বিচলিত হয়ে পড়েন মহানায়ক। এত হাহাকার দেখে কিছুতেই চুপ করে ঘরের ভিতরে বসে থাকতে পারেননি। তাঁর কাছে যে অর্থ সঞ্চিত ছিল, তা দিয়ে তো সম্পূর্ণ ত্রাণের কাজ সম্পন্ন হত না। তাই সহকারীদের নিয়ে টালিগঞ্জের রাস্তায়-রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন। এটা কি কেউ ভাবতে পেরেছিলেন। কেউ জানেনই না। আমি জানি। এর কারণ, আমি তখন চোখের সামনে সব দেখছি।”

বিগত ৭ বছর ধরে সাংবাদিকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত। ডিজিটাল মিডিয়ায় সাবলীল। লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার নেশা।

সম্পর্কিত খবর