চাষি থেকে রতন টাটার ডান হাত! থাকেন আম্বানির পাশের বিলাসবহুল বাড়িতে! চেনেন তাঁকে?

রতন টাটা (Ratan Tata) টাটা গ্রুপকে (Tata Group) নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। টাটা কোম্পানি তাঁর হৃদয়ের খুব কাছের। একজিন ভালো ব্যবসায়ী হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন বড় মনের মানুষ। তিনি বিহু মানুষকে সাহায্য করেছেন। সেইসঙ্গে নিজের পায়ে দাঁড়াতে অনেককেও সাহায্য করেছেন।

রতন টাটা এখন কোম্পানির কমান্ড তার খুব বিশেষ নটরাজন চন্দ্রশেখরনের (Natarajan Chandrasekaran) হাতে তুলে দিয়েছেন। এন চন্দ্রশেখরকে রতন টাটার খুব ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। আজ চন্দ্রশেখর যে সংস্থার কমান্ডে রয়েছেন সেই একই সংস্থায় তিনি ইন্টার্নশিপ করতেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তা জানে না। তাঁকে ভরসা করেন রতন টাটা। ব্যবসা সম্পর্কে তার বোঝাপড়া, ব্যবসায়িক পরিকল্পনা, কোম্পানির সাথে তার পরিচিতি তাকে রতন টাটার কাছাকাছি নিয়ে আসে।

   

রতন টাটার ডান হাত বলে বিবেচিত এন চন্দ্রশেখরন ১৯৬৩ সালে তামিলনাড়ুর এক অতি সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। চন্দ্রশেখরনের শৈশব কেটেছে অনেক কষ্টের মধ্যে দিয়ে। তবে তার পরিশ্রমের কমতি ছিল না। ভাইবোনদের সঙ্গে প্রতিদিন তিন কিলোমিটার হেঁটে স্কুলে যেতেন তিনি। বিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে তিনি কোয়েম্বাটুরের ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে স্নাতক হন। এর পরে তিনি তামিলনাড়ুর তিরুচিরাপল্লীর আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর করেন।

তিনি পড়াশোনায় সর্বদা ভাল ছিলেন, তাই তিনি কোয়েম্বাটুর ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে ভর্তি হন। এপ্লায়েড বিজ্ঞানে ডিগ্রি শেষ করার পরে, তিনি তিরুচিরাপল্লীর আঞ্চলিক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। চন্দ্রশেকরনকে ২০০৭ সালে টিসিএস বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এরপর তিনি চিফ অপারেটিং অফিসার অর্থাৎ সিওও এর দায়িত্ব পান। ২০০৯ সালের অক্টোবরে তিনি টিসিএসের সিইও নিযুক্ত হন। মাত্র ৪৬ বছর বয়সে সিইও হন তিনি। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির সর্বকনিষ্ঠ সিইও।

Tata chandra

মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৯ সালে চন্দ্রশেখরনের বার্ষিক বেতন ছিল ৬৫ কোটি টাকা। ২০২১-২২ সালে তা বাড়িয়ে ১০৯ কোটি টাকা করা হয়। ২০২০ সালে মুম্বই পেডার রোডে ৯৮ কোটি টাকায় একটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট কিনেছিলেন তিনি। চন্দ্রশেখরনের নেতৃত্বে ২০২২ সালে টাটা গোষ্ঠীর মুনাফা ৬৪২৬৭ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ২০১৭ সালে তিনি যখন দায়িত্ব নেন, তখন লাভ ছিল ৩৬৭২৮ কোটি টাকা। চন্দ্রশেখরনের পাঁচ বছরের শাসনকালে টাটা গোষ্ঠীর আয় ৬.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৯.৪৪ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। এই ফ্ল্যাটের ভাড়া মাসে ২০ লক্ষ টাকা। ফিটনেসের দিক থেকেও এগিয়ে এন চন্দ্রশেখরন।

চন্দ্রশেখরন কখনও তাঁর রুটিন ভাঙেন না। অফিসের কাজে যত দেরি হোক না কেন, ভোর ৪টায় উঠে দৌড়ান। তিনি একজন ম্যারাথন দৌড়বিদ। তিনি ম্যারাথন এবং হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করেছেন। অনেকেই হয়তো জানেন না যে তিনি ৯৮ কোটি টাকার মূল্যের একটি বাড়িতে থাকেন। এই বাড়িটি ব্যবসায়ী মুকেশ আম্বানির বাড়ির খুব কাছেই।

বিগত ৭ বছর ধরে সাংবাদিকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত। ডিজিটাল মিডিয়ায় সাবলীল। লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার নেশা।

সম্পর্কিত খবর