রামায়ণের সঙ্গে যুক্ত, বিশ্বের সবথেকে ভয়ানক ভূতুড়ে গ্রাম আছে ভারতে! অনুভব হয় অদৃশ্য শক্তির

ভারতে (India) এমন কিছু জায়গা আছে যে জায়গা সম্পর্কে খুব মানুষই হয়তো জানেন বা একদমই জানেন না। এই নিয়ে মানুষের কৌতূহলের শেষ নেই। অনেকেই আছেন যারা চিররাচরিত জায়গায় ঘুরতে যেতে ভালোবাসেন। আবার অনেকেই আছেন যারা একটু অফবিট জায়গায় ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। আবার এমন কিছু ভ্রমণপিপাসু মানুষ রয়েছেন যারা একটু ‘কুখ্যাত’ জায়গায় যেতে ভালোবাসেন। আজকের এই প্রতিবেদনে ভারতের তেমনই এক কুখ্যাত জায়গা সম্পর্কে বলা হবে যেখানে যেতে মানুষ কেন কাক, পক্ষীও ভয় পায়। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন।

আজ আমরা আপনাকে আমাদের দেশের এমন একটি জায়গার কথা বলতে চলেছি যা পৌরাণিক ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত, আর যারা এখানে আসে তারা অদৃশ্য শক্তি অনুভব করে। এই প্রতিবেদনে তামিলনাড়ুর (Tamil nadu) রামেশ্বরমে (Rameswaram) অবস্থিত ধনুষকোডিকে (Dhanushkodi) নিয়ে আলোচনা হবে। এই জায়গাটিকে ঘিরে নানা জনের নানা মত রয়েছে। এই জায়গাটি রামায়ণের সাথে সম্পর্কিত বলে বিশ্বাস করা হয় এবং এটি রামায়ণেও বলা হয়েছে। এ কারণেই এই স্থানটি ধর্মীয় ও পবিত্র বলে বিবেচিত হয়। এ কারণে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ এখানে আসেন। যারাই এখানে আসেন তাঁরাই বলেন যে জায়গাটির মধ্যে অন্য একটি ব্যাপার রয়েছে।

   

যাইহোক এই জায়গাটি তামিলনাড়ুর পূর্ব উপকূলে অবস্থিত রামেশ্বরম দ্বীপের দক্ষিণে অবস্থিত একটি ছোট গ্রাম। যেখান থেকে শ্রীলংকা দেখা যায়। কথিত আছে যে ভগবান রাম যখন লঙ্কা জয় করেছিলেন এবং রাবণকে হত্যা করেছিলেন, তখন লঙ্কার দায়ভার বিভীষণের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। বিভীষণ যখন লঙ্কার রাজা হন, তখন তিনি ভগবান রামকে লঙ্কায় এসে রাম সেতু ভাঙার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। রাম বিভীষণের অনুরোধ গ্রহণ করেন এবং তার ধনুকের এক প্রান্ত দিয়ে সেতুটি ভেঙে দেন। তখন থেকেই সেই জায়গার নাম ধনুষকোডি। ধনুষকোডি বর্তমানে ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে একমাত্র স্থল সীমান্ত। রাবণ একটি নেতিবাচক শক্তি হিসাবে পরিচিত, যদিও তিনি একজন মহান জ্যোতিষী এবং শিবের ভক্ত ছিলেন। ধনুষকোটি সম্পর্কে একটি কিংবদন্তি রয়েছে যে রাবণের সাথে যুদ্ধে বিজয়ের পরে ভগবান রাম ব্রহ্মচার্যের অপরাধ বোধ থেকে মুক্তি পেতে এখানে একটি যজ্ঞ করেছিলেন।

ধনুষকোডি একটি ধর্মীয় স্থান হিসাবে পবিত্রতম স্থান তবে এটি একটি ভুতুড়ে স্থান হিসাবেও পরিচিত। লোকেরা যখন এখানে আসে, তখন তারা ভূত এবং আত্মা অনুভব করার কথা বলে। এই দাবির পিছনে কারণ হল ১৯৬৪ সালে এখানে আসা তীব্র ঘূর্ণিঝড়। যা ধনুষকোডির সৌন্দর্যকে চিরতরে বদলে দিয়েছে। আসলে ১৯৬৪ সালে প্রচণ্ড ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। এ সময় ২০ ফুট উচ্চতার ঢেউ উঠে পুরো শহরকে ধ্বংস করে দেয়। যার মধ্যে এখানে বসবাসকারী প্রায় ১৮০০ মানুষ মারা যায়।

dhanushkodi 2

কথিত আছে যে এই দুর্যোগের পরে ধনুষকোডিতে অদ্ভুত কিছু জিনিস লক্ষ্য করা গিয়েছে। লোকে বলে যে এই জায়গায় সর্বদা কারও উপস্থিতি রয়েছে। এই কারণেই তামিলনাড়ু সরকার এই জায়গাটিকে ভুতুড়ে বলে অভিহিত করেছে এবং এখানে মানুষের বসবাস নিষিদ্ধ করেছে। এখন সূর্যাস্তের পর এই স্থানে কারও থাকার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

বিগত ৭ বছর ধরে সাংবাদিকতার পেশার সঙ্গে যুক্ত। ডিজিটাল মিডিয়ায় সাবলীল। লেখার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার নেশা।

সম্পর্কিত খবর