দেবপ্রসাদ মুখার্জী: এই বর্ষায় পাহাড়ি অঞ্চলে ধস নামার ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। কিন্তু মোটামুটি সমতল এলাকায় ধস নামার ঘটনা শুনলে অবাক তো হতেই হয়। সম্প্রতি, রাজস্থানে ধস নামার একটি ঘটনা ঘটেছে, যার জেরে দিল্লি-মুম্বই হাইওয়ে পরিণত হয়েছে ‘পাতাল এক্সপ্রেসওয়ে’তে। মাঝ রাস্তায় ধস নেমে এক বিশাল গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই ঘটনার কারণ খুঁজতে গিয়ে চাকরি হারিয়েছেন এক কর্মী।
সম্প্রতি রাজস্থানের দৌসা এলাকায় দিল্লি-মুম্বই এক্সপ্রেসওয়ের একটি অংশ ধসে পড়ে। আর এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চর্চা শুরু হয়েছে। এটি এক্সপ্রেসওয়ে ভারতের দীর্ঘতম ‘গ্রীন ফিল্ড এক্সপ্রেসওয়ে’ হতে চলেছে, যার দৈর্ঘ্য ১,৩৮৬ কিলোমিটার। এটি সড়ক পথে দিল্লি থেকে মুম্বই যাতায়াতের সময় প্রায় অর্ধেক করে দেবে। তবে এই প্রকল্পের কাজ এখনো পুরোপুরি শেষ হয়নি। ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত কাজের ৮০% সম্পূর্ণ হয়েছে। পুরো প্রকল্প শেষ হতে আরো এক বছর সময় লাগবে বলে জানানো হয়েছে। এর মাঝেই ঘটে গেল ধস নামার ঘটনা, যার জেরে চাকরি হারিয়েছেন এক কর্মী।
ইঁদুরের গর্তে জল ঢুকে ধসের ঘটনা?
রাজস্থানের দৌসা জেলার ধসের ঘটনাটি ঘটার পর, KCC Buildcon-এর এক কর্মী সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন যে, এক্সপ্রেসওয়ের উপর এই ধসের কারণ ইঁদুরের গর্ত। তাঁর মতে, ইঁদুর বা ছোট প্রাণী মাটি খুঁড়ে রেখেছিল। যার ফলে সেই গড়তে বৃষ্টির জল ঢুকে পড়ে। সেই কারণে রাস্তার নিচের মাটি দুর্বল হয়ে যায়। কর্মীর এমন এই মন্তব্য সামনে আসার পেই কোম্পানি তাঁকে ছাঁটাই করে। তিনি প্রকল্পটির কারিগরি দিক সম্পর্কে সঠিকভাবে না জেনে এই মন্তব্য করেছেন বলে KCC Buildcon-এর আধিকারিকরা জানান। তাঁদের মতে, এই ধসের মূল কারণ ব্যাপক বৃষ্টিপাত।
সরকারকে কটাক্ষ বিরোধীদের
ঘটনার পরপরই ধসে যাওয়া অংশটিতে দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হয়। রাস্তার ধসে যাওয়া অংশটি ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে। এই ধসের ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও শুরু হয়েছে। কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করে একে ‘পাতাল এক্সপ্রেসওয়ে’ বলে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা।
প্রশ্নের মুখে সড়ক নির্মাণ
এই ঘটনা দিল্লি-মুম্বই এক্সপ্রেসওয়ের মতো বড় প্রকল্পের নির্মাণ মানের ওপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তবে KCC Buildcon-এর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃষ্টির কারণে কিছু অংশে সমস্যা দেখা দিলেও দ্রুত মেরামতি কাজ চালু রয়েছে এবং এক্সপ্রেসওয়ের গুণগত মানের বিষয়ে কোনো আপস করা হয়নি।