শ্বেতা মিত্র, দিল্লিঃ আবগারি দুর্নীতিকাণ্ডে বর্তমানে জামিনে রয়েছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। গত শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সাময়িক জেলমুক্তি হয়েছে তাঁর। কিন্তু এ কী বললেন তিনি? জেলমুক্তির একদিন হতে না হতেই কেজরিওয়াল ঘোষণা করলেন আগামী দুদিনের মধ্যে তিনি ইস্তফা দেবেন। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। স্বাভাবিকভাবেই কেজরিওয়ালের এহেন ঘোষণায় দেশীয় রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে এখানে আরও একটি প্রশ্ন উঠছে, সেটি হল, দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন?
পদত্যাগের ঘোষণা কেজরিওয়ালের
আজ রবিবার দলীয় কর্মীদের তরফে আয়োজিত একটি সভায় হাজির হয়েছিলেন কেজরিওয়াল। এদিন আপ কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এসময় কেজরিওয়াল বড় ঘোষণা করে বলেন, দু’দিন পরেই তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেবেন।
এদিন অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘ঈশ্বর আমাদের সকলের উপর অনেক আশীর্বাদ করেছেন। এজন্য আমরা বিজয়ী হয়েছি এবং অনেক প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। এরইসঙ্গে আমি লক্ষ লক্ষ মানুষকে ধন্যবাদ জানাই যারা আমাদের সহকর্মীদের জন্য প্রার্থনা করেছেন।’ বিজেপিকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘এরা আম আদমি পার্টিকে জেলে পাঠিয়ে ভাঙতে চাইছে। কিন্তু কারাগারে থাকার কারণে আমার মনোবল বেড়েছে। জেল থেকে এলজিকে চিঠি লিখেছিলাম। লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে চিঠি লেখার জন্য আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পরিবারের সঙ্গেও দেখা না করার হুমকি দেওয়া হয়।’ এদিকে কেজরির এহেন পদত্যাগের ঘোষণার পর প্রশ্ন উঠছে, কেজরি পদত্যাগ করলে কে হবেন দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী?
কে হবেন দিল্লির পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী?
এখানে তালিকা কিন্তু বেশ অনেকটাই লম্বা। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘দু’দিন পরেই আমি মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেব। জনগণ রায় না দেওয়া পর্যন্ত আমি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসব না।’ তিনি বলেন যে, ‘আমি এবং মণীশ সিসোদিয়া জনগণের মধ্যে যাবো, তাঁদের সঙ্গে মিশে কথা বলবো। কিন্তু দিল্লি বিধানসভা ভাঙা হবে না। আমার জায়গায় আরও একজন মুখ্যমন্ত্রী হবেন।’ কিন্তু গদিতে কে বসবেন? বিধায়কদের মধ্য থেকে দলে একজনকে মুখ্যমন্ত্রী করা হবে এটা প্রায় নিশ্চিত। এমন পরিস্থিতিতে তিনটি বড় মুখের আবির্ভাব ঘটেছেন। তিনজনই আবার আম আদমি পার্টি সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী এবং ২০১২ সালে আম আদমি পার্টির প্রতিষ্ঠার পর থেকে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে রয়েছেন। এখন আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন যে তাঁরা কে? তাহলে সেই নামগুলি হল গোপাল রায়, আতিশি মর্লেনা এবং সৌরভ ভরদ্বাজ।
আতিশি
আতিশি দিল্লি সরকারের পূর্ত দফতর, শিক্ষামন্ত্রীর পদে রয়েছেন। তিনি দিল্লির কালকাজি আসনের বিধায়ক। নারী হিসেবে দল তার নামের ওপর বাজি ধরতে পারে। ১৫ অগস্ট তিহার জেলে কেজরিওয়াল যখন তেরঙ্গা উত্তোলনের অনুষ্ঠান করছিলেন, তখন কেজরিওয়াল অতিশির নাম এগিয়ে দেন।
গোপাল রাই
মুখ্যমন্ত্রীর পদের জন্য অন্যম বড় দাবিদার গোপাল রাই। গোপাল রাই দিল্লিতে আম আদমি পার্টির আহ্বায়ক এবং অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অনুপস্থিতিতে দলীয় সংগঠনের কাজকর্ম পরিচালনা করেন। গোপাল রাই কেজরিওয়াল সরকারের কেবিনেট মন্ত্রী। গোপাল রাই বাবরপুর কেন্দ্রের বিধায়ক।
সৌরভ ভরদ্বাজ
তিন নম্বরে রয়েছে সৌরভ ভরদ্বাজের নাম। সৌরভ ভরদ্বাজ গ্রেটার কৈলাস আসনের বিধায়ক এবং সরকারের একজন মন্ত্রীও। সৌরভ ভরদ্বাজের স্বাস্থ্য, নগরোন্নয়নের মতো বড় বড় বিভাগ রয়েছে।