শ্বেতা মিত্রঃ রেল সফর করেন নি ভারতে এমন লোকের দেখা পাওয়া দুষ্কর। রোজকার যাতায়াতের পাশাপাশি দূরে কোথাও যাওয়ার জন্য ট্রেনই এখনও অনেকের প্রথম পছন্দ। সবরকম যাত্রীর কথা মাথায় রেখে ভারতীয় রেলে রয়েছে বিভিন্ন রকমের ভাড়ার কামরা। দূর ভ্রমণের সময় বহু স্টেশন হয়ে ছুটে চলে ট্রেন। ছোটো বড় বিভিন্নরকমের স্টেশনের ওপর দিয়ে ছুটে চলে ট্রেন। কিছু স্টেশনের নাম অনেকেই জানেন। আবার এমনও অনেক স্টেশন রয়েছে যেগুলোর নাম হয়তো শোনেননি। ভারতের প্রায় প্রতি কোণায় ছড়ানো রয়েছে রেল ট্র্যাক। জনপ্রিয় স্থানের পাশাপাশি অখ্যাত কোনও গ্রামে গেলেও পেয়ে যাবেন রেল স্টেশন। আজ আমরা এমন একটা রেল স্টেশনের কথা বলতে চলেছি যেখানে ট্রেন প্রায় থামেনা বললেই চলে।
এক নির্জন স্টেশনের গল্প
বছরের অধিকাংশ দিন নির্জন থাকে স্টেশন। সারা বছরে মাত্র একবার এখানে এসে থামে ট্রেন। তখন লোকে লোকারণ্য। গমগম করে স্টেশন চত্বর। বললে হয়তো বিশ্বাস করবেন না, এই স্টেশন বাংলার ঠিক পাশের রাজ্যেই। অনেকেই এই স্টেশনের নাম জানেন না। বিশেষ এক তিথিতেই স্টেশনে এসে দাঁড়ায় ট্রেন। আমাদের এই প্রতিবেদনে আলোচ্য রেল স্টেশনের নাম অনুগ্রহ নারায়ণ রোড ঘাট। পিতৃপক্ষের সময় এখানে ট্রেন এসে থামে।
বছরে মাত্র ১৫ দিন দাঁড়ায় ট্রেন
১৫ দিনের জন্য ট্রেন সেখানে দাঁড়ায়। এই স্টেশনের পাশেই রয়েছে পুনপুন নদী। ঐতিহাসিক মতে এই নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। পিতৃপক্ষে এই নদীর ঘাটে যাওয়ার জন্যই ভিড় জমান হাজার হাজার মানুষ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, এই বিশেষ তিথিতে বিদেশ থেকেও আসে লোকজন। অনেকে মনে করেন, পিণ্ড দান প্রথা এখানেই প্রথম হয়েছিল। পুরাণে পুনপুন নদীকে আদিগঙ্গা বলা হয়। পুনপুন নদীর ঘাটে প্রথমে পিণ্ড দান না করলে, সেই পিণ্ড দান বৃথা হয় বলেও অনেকে বিশ্বাস করেন। এই রেল স্টেশন তৈরি করাও হয়েছিল সেই উদ্দেশ্যে, যাতে মানুষ এসে এখানে পিণ্ড দান করতে পারেন। বছরের বিশেষ সময়ে তর্পণ এবং শ্রাদ্ধের কারণে অনুগ্রহ নারায়ণ রেলওয়ে ঘাট স্টেশনের এতো জনপ্রিয়তা।