প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: দেখতে দেখতে প্রায় ১ মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও অধরা বেশ কিছু তথ্য। আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির পর ধর্ষণ-খুনের মামলার তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই প্রকাশ্যে আসছে নানা তথ্য। যদিও প্রথমেই কলকাতা পুলিশের তরফে সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রাইকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে CBI এই তদন্ত হস্তক্ষেপ করে নেওয়ায় বহু দিন বাদে ওই ঘটনায় আর্থিক দুর্নীতি কাণ্ডে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়, তারপর ধর্ষণ এবং খুনের মামলায় তথ্য প্রমাণ লোপাটের কারণে ফের সন্দীপ ঘোষকে এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তদন্ত এখানেই শেষ নয়।
আরজি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসককে খুন-ধর্ষণের ঘটনার তদন্তে নেমে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য আদালতে মুখবন্ধ খামের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতিদের কাছে পেশ করে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তথা CBI। কিন্তু চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত একজনেরই সরাসরি জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে এমনটাই জানানো হয়েছে CBI এর তরফে। আর এই আবহেই এবার আরও এক বিস্ফোরক দাবি তুলল CBI। আরজি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণে অভিযুক্ত সঞ্জয় রাইকে নাকি আগে থেকেই চিনতেন টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল।
সঞ্জয়কে আগে থেকেই চিনতেন টালা থানার ওসি!
মঙ্গলবার অভিজিৎ মণ্ডলকে আদালতে পেশ করে CBI জানিয়েছে যে অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতারির পর তাঁর মোবাইল ফোন নিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়। সেখান থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে। এবং খতিয়ে দেখা হয়েছে যে ঘটনার ঠিক পরে তিনি কার কার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। সেই সূত্রেই দেখা গিয়েছে সিভিক ভলান্টয়ার সঞ্জয় রাইকে আগে থেকেই চিনতেন অভিজিৎ মণ্ডল। বিভিন্ন সময় তাঁদের মধ্যে ঘণ্টার পর ঘন্টা কথা হয়েছে। তাইতো ঘটনার খবর পেয়েই তথ্যপ্রমাণ লোপাট করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছিলেন অভিজিৎ মণ্ডল।
পর্যাপ্ত প্রমাণ হাতে পেলেই অন্য ধারায় গ্রেফতার হবেন সন্দীপ এবং অভিজিৎ?
তাইতো অভিজিৎ তথ্য প্রমাণ লোপাট করে ঘটনা ঘটার ১৪ ঘণ্টা পর FIR দায়ের করেছিলেন। এছাড়াও সিবিআইয়ের দাবি, ঘটনার অভিজিৎ মণ্ডলের সঙ্গেও সন্দীপ ঘোষের ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হয়েছে। সন্দীপের নির্দেশেই অভিজিৎ মণ্ডল তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছেন কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে গতকাল সুপ্রিম কোর্ট CBI এর কাছে জানতে চেয়েছিল ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় কি সরাসরি অভিজিৎ এবং সন্দীপের হাত ছিল কিনা, কিন্তু তাতে সিবিআই জবাব দেয় না, শুধু তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ এর জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক মামলা তাই তাতেই আপাতত ২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।বাকি পর্যাপ্ত প্রমাণ হাতে এলে তাদের বিরুদ্ধে আলাদা ধারা প্রয়োগ করবে সিবিআই।