প্রীতি পোদ্দার: আরজি কর-কাণ্ডের পর গত আগস্ট মাসে রাতে কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তায় জোর দিতে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় রাতের কর্মস্থলে মহিলাদের নিরাপত্তায় মূলত ১৭টি পদক্ষেপের কথা জানিয়েছিল। এমনকি একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন, যত দূর সম্ভব মহিলাদের রাতের শিফ্ট থেকে অব্যাহতি দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
এছাড়াও রাজ্য সরকার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলিতে নিরাপত্তা বৃদ্ধির উপর জোর দিয়েছিল। নবান্ন সূত্রে বলা হয়েছে রাজ্যের সমস্ত হাসপাতালে মহিলাদের জন্য পৃথক বিশ্রামকক্ষ, শৌচালয় এবং প্রতিটি তলায় জলের বন্দোবস্ত রাখতে হবে। এবং হাসপাতালগুলিতে প্রত্যেকের গলায় পরিচয়পত্র ঝোলানো বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের এহেন পরিষেবা নিয়ে রীতিমত রাজ্য জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছিল। বিভিন্ন মহলে সমালোচিত হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তি। এবার সেই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে সরাসরি রাজ্য প্রশ্নের মুখে পড়লেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এর কাছে।
ফের প্রধান বিচারপতির কড়া প্রশ্নের ফাঁদে রাজ্য
সূত্রের খবর, আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার শুনানির সময় এক আইনজীবী রাজ্য সরকারের মহিলাদের দেওয়া এই পরিষেবা নিয়ে নিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আর ঠিক তখনই প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, “এটি কী ভাবে হতে পারে? মহিলারা এই ধরনের কোনও ছাড় চান না। তাঁরা চান সমান সুযোগ। মহিলা ডাক্তারেরা সব পরিস্থিতিতে কাজ করতে চান। তাঁদের সব পরিস্থিতিতে কাজ করা উচিত। রাজ্যকে এটি সুনিশ্চিত করতে হবে।” এছাড়াও তিনি পাল্টা প্রশ্ন করেন কী ভাবে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করল রাজ্য? এবং রাজ্যকে ওই বিজ্ঞপ্তি সংশোধন করার জন্য নির্দেশ দেন শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বেশ খুশি আন্দোলনকারীরা
প্রধান বিচারপতির এই নির্দেশের পর রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিব্বল আশ্বস্ত করেন যে ওই সরকারি বিজ্ঞপ্তির পাঁচ ও ছয় নম্বর অংশ নিয়েই মূলত আপত্তি ওঠে এজলাসে। এবার সেই অংশটুকু মুছে ফেলা হবে। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর আন্দোলনরত মহিলা ডাক্তারেরা বেশ খুশি। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশকে স্বাগত জানিয়ে আরজি করের জুনিয়র রেসিডেন্ট ডাক্তার রিয়া বেরা জানান, “আমার সঙ্গে যে ছেলেরা পড়াশোনা করছেন, তাঁরা সমান পড়াশোনা করে এসেছেন। তা হলে কাজের ক্ষেত্রে কেন আমরা সমান সুযোগ পাব না? আমরা তো খাঁচার পাখি নই।”