শ্বেতা মিত্র, মেদিনীপুরঃ এবার বড় এক ঘটনা ঘটে গেল খোদ বাংলার বুকে। ধ্বংস করে দেওয়া হল শিবের মন্দির। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন। আর এহেন ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বাংলায়। বাংলায় এমন বহু মন্দির রয়েছে যেগুলি দেখার জন্য প্রতি বছর দেশ বিদেশ থেকে নানা পর্যটক ছুটে আসেন। তেমনই একটি বিখ্যাত মন্দির হল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার হরিরামপুর শীতলানন্দ শিবের মন্দির। এই মন্দির এতদিন ধরে এক আলাদাই ইতিহাস এবং ঐতিহ্য বহন করে চলছিল। তবে এবার এই বিখ্যাত মন্দিরটিকেই কিনা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হল!
বিস্ফোরক পোস্ট গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের
নিজের ফেসবুক পেজে বরাবরই কিছু না কিছু নিয়ে সরব হন বাংলা পক্ষ-র গর্গ চট্টোপাধ্যায়। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। কিন্তু এবার তিনি যা লিখলেন তা দেখে চমকে গিয়েছেন সকলেই। তিনি লেখেন, ‘ফেসবুকে এই পোস্টটা দেখে আমার খুব কষ্ট লাগছে। ধ্বংস করা হলো দাসপুর থানার হরিরামপুর শীতলানন্দ শিবের মন্দির । অসংখ্য টেরাকোটা সমৃদ্ধ মন্দিরটি বহু গবেষক ও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিল। উনিশ শতকের মধ্যে পর্বে নির্মিত মন্দিরটি আজ শুধুমাত্র ইটের স্তুপ। নিজের মাটিতে পুঁজির মালিক যে বাঙালি জাতি নয়, নিজের মাটিতে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার যে বাঙালি জাতির নেই, সে বাঙালি জাতি যে ইতিহাস বিস্তৃত হবে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ পুঁজি ও ক্ষমতা গড়ে চেতনা। ইতিহাস চেতনাও। তাই ভারতে বাঙালি ইতিহাস বিস্মৃত জাতি।’
তিনি আরও লেখেন, “আধুনিক” মন্দির তৈরি হবে। অর্থাৎ তাতে বাঙালি শিল্পী সত্তার কোন ছোঁয়া থাকবে না। হয়তো আধুনিক দেবতারা আসবে, যে দেবতা বাংলায় পূজিত হতেন না এই মন্দির নির্মাণের সময় কিন্তু হিন্দি সিনেমায় পুজো করা হয়। যা কিছু আমাদের জাতির অর্জন, তার রক্ষা করতেই বাংলা পক্ষ তৈরি হয়েছে। বাংলা পক্ষকে খুব দ্রুত বাংলার রাশ সাথে নিতে হবে, নাহলে সব ধ্বংস হয়ে যাবে।’
ক্ষুব্ধ নেটিজেনরাও
এহেন মন্দির ধ্বংসের ছবি দেখে ক্ষুব্ধ নেটিজেনরাও। একজন লিখেছেন, ‘এই ধ্বংসের কারণ, প্রকৃত শিক্ষার অভাব। আমরা পুরোনো ভেঙে নতুন গড়ি, আর ইউরোপিয়ানরা পুরোনোকে সঠিক উপায় রক্ষণাবেক্ষণ করে। এটাই পার্থক্য। আমাদের নিজেদের সভ্যতা কালচার নিয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। সবসময় অন্যের অনুকরণ করে আমাদের দিন কাটে।’
অন্য আরেকজন লিখেছেন, ‘এত অসাধারণ সব শিল্প কাজ। কেন ভাঙা হলো আর কারা ভাঙলো কিছুই বুঝতে পারছি না। স্থানীয় মানুষ, প্রশাসন, সরকার সব কি ঘুমিয়ে আছে।কি করে এই ঐতিহাসিক অমূল্য সম্পদ গুলো নষ্ট করা হচ্ছে।’