শ্বেতা মিত্রঃ ফের একবার শিরোনামে উঠে এলো পাকিস্তান। বিগত কয়েক বছর ধরে কিছু না কিছু ঘটনাকে কেন্দ্র করে বারবার শিরোনামে উঠে আসে পাকিস্তান। সে দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও কিংবা পেট্রোল ডিজেলের দাম, ইত্যাদি নানা বিষয়কে কেন্দ্র করে সকলের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে ভারতের প্রতিবেশী দেশটি। এবারও তার ব্যতিক্রম ঘটল না। কিন্তু এবারে পাকিস্তান এমন একটি বিষয়কে ঘিরে সকলের আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে যেটি সম্পর্কে শুনলে আপনিও অবাক হয়ে যাবেন। পাকিস্তানি নাকি আচমকাই নাকি গাধার অনেক চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। চাহিদা এতটা পরিমাণে বেড়ে গিয়েছে যে, আকাশছোঁয়া দামে সেটি বিক্রি হচ্ছে। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
পাকিস্তানে গাধার চাহিদা তুঙ্গে
পাকিস্তানে গাধার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যার কারণে তাদের দাম আকাশছোঁয়া। এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন এরকম দাম বৃদ্ধির কারণ কী? তাহলে জানিয়ে রাখি, এর নেপথ্যে রয়েছে চিন্তা। পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় বন্ধু চিন, যেখানে ঐতিহ্যবাহী ওষুধ ও প্রসাধনীতে গাধার চামড়া ব্যবহার বাড়ছে। একাধিক মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, পাকিস্তানে নাকি একটি গাধার দাম তিন লাখ পাকিস্তানি রুপি অবধি পৌঁছেছে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। যদিও এর ক্রমবর্ধমান দাম যারা গাধা চালিয়ে নিজের ও পরিবারের জীবিকা নির্বাহ করেন তাঁদের ওপর নতুন করে এক সংকট তৈরী হয়েছে।
মাথায় হাত সকলের
এক রিপোর্ট অনুযায়ী, করাচির লিয়ারি জেলার সাপ্তাহিক গাধার বাজারে অত্যাধিক দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে স্থানীয় ক্রেতার সংখ্যা মারাত্মকভাবে হ্রাস পেয়েছে। গাধার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা চিন থেকে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে দাম বৃদ্ধিকে দায়ী করছে । সকলের বক্তব্য, গাধার চামড়া বিভিন্ন প্রসাধনী তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এবং আজিয়াও নামে একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা ওষুধ তৈরি হয়। এই চাহিদার কারণে চিনে প্রতি বছর লাখ লাখ গাধা হত্যা করা হয়।
পাকিস্তানি একটা বড় সংখ্যার মানুষ গাধার গাড়ি চালান। এই দাম বৃদ্ধির কারণে মহা ফাঁপরে পড়েছেন বেশিরভাগ মানুষের। অনেকে আক্ষেপের সুরে বলছেন, যে গাধা একসময় ৮,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকায় বিক্রি হত সেগুলি এখন যথারীতি ৩০,০০০ থেকে ৩৫,০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে এসব চালকের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ২০২৪ সালের অর্থনৈতিক সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, পাকিস্তানে গাধার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
চিনের আজব শখ
চিনের আজব ইচ্ছার জেরে সমস্যায় পড়েছেন পাকিস্তানের বহু মানুষ। Ejiao একটি ঐতিহ্যবাহী চীনা ঔষধ। এটি গাধার চামড়া থেকে নিষ্কাশিত কোলাজেন থেকে তৈরি করা হয়। সৌন্দর্য পণ্যগুলির জন্য বড়ি বা তরল হিসাবে প্রস্তুত করার জন্য কোলাজেন ভেষজ এবং অন্যান্য উপাদানগুলির সাথে একত্রিত হয়। গত এক দশকে Ejiao শিল্প দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৩ এবং ২০২৬ সালের মধ্যে, Ejiao-র বার্ষিক উত্পাদন বার্ষিক ২০ শতাংশ হারে ৩২০০ থেকে ৫৬০০ টনে বেড়েছে। ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে আজিওর উৎপাদন বেড়েছে ১৬০ শতাংশ।