‘এবার গ্রেফতার হতে পারেন বিনীত গোয়েল’! রাজ্য জুড়ে তুঙ্গে শোরগোল

Indiahood Desk

‘এবার গ্রেফতার হতে পারেন বিনীত গোয়েল’! রাজ্য জুড়ে তুঙ্গে শোরগোল

প্রীতি পোদ্দার, কলকাতা: গত শনিবার, টানা দুই ঘণ্টারও বেশি বৃষ্টিতে ভিজেও কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হয় নি জুনিয়র ডাক্তারদের। একদিকে বাড়ির দুয়ারে অপেক্ষারত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অন্যদিকে বাড়ির বাইরে বৃষ্টিতে ভিজে অনুমোদনের অপেক্ষায় জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিদল। দুই ফ্রেমে দুটো ছবিতে বার্তা সম্পূর্ণ স্পষ্ট। তবে এর মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বাইরে এসে তাঁদেরকে ভিতরে যেতে বলেছিলেন। এবং বৃষ্টিতে ভিজতে বারণ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, জুনিয়র ডাক্তারদের চায়ের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। এক নিমেষেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে প্রকৃত ‘অভিভাবক’ হয়ে ওঠেন।

বৈঠকে বাঁধা দেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য!

তবে এত কিছুর পরেও প্রশাসন লাইভ স্ট্রিমিং বা ডাক্তারদের তরফ থেকে ভিডিয়ো রেকর্ড করার অনুমতি দেয়নি। তবুও চিকিৎসকরাও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেছে। শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র বৈঠকের ‘মিনিটস’ নিয়েই কথা বলতে রাজি হন জুনিয়র ডাক্তারা। তবে ততক্ষণে উলটোদিক থেকে বেঁকে বসে প্রশাসন। বৈঠক করা হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয় জুনিয়র ডাক্তারদের। একপ্রকার কান্নায় ভেঙে পড়েন সকলে। একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছিল যে আন্দোলনকারীরা বৈঠকের আর্জি জানাচ্ছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকে জানান, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। আজ আর বৈঠক সম্ভব না। এমনকি চিকিৎসকরা আর্জিও জানিয়েছিলেন, যাতে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্যে হলেও বৈঠক হয়।

বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর!

   

কিন্তু আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে তাঁদের। বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় কার্যত ভেঙে পড়েন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকার বলছে তাঁরা দু’ঘণ্টা অপেক্ষা করেছে, তাই মুখ্যমন্ত্রী এখন আর বৈঠক করতে পারবেন না। এদিকে আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা যে ৩৫ দিন ধরে অপেক্ষা করছেন এবং বৃষ্টিতে ভিজে তাঁরা কালীঘাটের সামনেও অপেক্ষা করেছে কয়েক ঘণ্টা সেটা নজরে পড়ছে না প্রশাসনের। আর এই আবহে এবার বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রশাসনের তরফ থেকে এদিন বৈঠক না হওয়ার কারণ হিসেবে বলে বসলেন টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলের গ্রেফতারি।

সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ এবং চিকিৎসকদের কথাবার্তার ভিডিয়ো প্রকাশ করে শুভেন্দু অধিকারী লেখেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এবং জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে বৈঠক বাতিলের আসল কারণ হল টালা থানার ওসি এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ আরজি কর কাণ্ডের ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় গ্রেফতার। আসলে এই গ্রেফতারির খবরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। তিনি আশঙ্কা করেছেন যে এরপর পরবর্তী ব্যক্তিটি হতে পারেন বিনীত গোয়াল। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং মনোজ পন্তকে বৈঠক বাতিল করতে বলেছিলেন তিনি।’

কী বলছেন সুকান্ত মজুমদার?

অন্যদিকে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘আমরা যখন টালা থানার ওসি ও সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির খবর পেলাম, তখনই বুঝতে পেরেছি দেরিটা কেন হয়েছিল। আসলে এই দুটি খবর মিডিয়ার কাছে পৌঁছনোর আগেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আগেই পৌঁছে গিয়েছিল। তাই স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক বাতিল করে দিলেন। আসলে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন যে এরপর CBI হাতটা কার দিকে এগোবে, টালা থেকে টালির দিকে নয় তো। তাই মিটিং বাতিল করেছেন’।

বাছাই করা গুরুত্বপুর্ন খবর পেতে গ্রুপে যুক্ত হোন