দেবপ্রসাদ মুখার্জী: বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই ভারতের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছে মৌলবাদীরা। এমনকি এক কট্টর ইসলামপন্থী নেতাকে সম্প্রতি জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকার। আর জেল থেকে ছাড়া পেয়েই ওই মৌলবাদী নেতা ভারতকে ভাঙার কথা বলেছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন যাতে বাংলাকে মোদী সরকারের কাছ থেকে স্বাধীন করা হয়।
সম্প্রতি, জেল থেকে মুক্তি পাওয়া কট্টর ইসলামপন্থী মৌলবাদী নেতা জসিমুদ্দিন রহমানি হাফি আল-কায়েদার সাথে যুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম বা ABT-র প্রধান। তিনি জেল থেকে বেরিয়েই পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মোদি সরকার থেকে বাংলাদেশকে আলাদা করে স্বাধীনতা ঘোষণা করার আহ্বান জানিয়েছেন। জসিমুদ্দিন রহমানি হাফি ভারত ভেঙে দিল্লিতে ইসলামিক পতাকা লাগানোর হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। আর তাঁর এইসব দাবিকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট শোরগোল পড়েছে ভারতে।
ভারত ভাঙার হুঁশিয়ারি দিলেন মৌলবাদী নেতা
মোহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার গত মাসে জাহরিল রহমানিকে জেল থেকে মুক্তি দিয়েছে। মুক্তমনা ব্লগারদের হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ২০১৩ সাল থেকে তিনি জেলবন্দি ছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি আবারও ভারত ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজ করেছেন। একটি ভিডিওতে তিনি ভারতকে টুকরো টুকরো করার কথা বলেছেন। এতে তিনি ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে দেশ থেকে আলাদা করার কথাও বলেছিলেন। প্রাপ্ত খবর, রাহমানি পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের কাছ থেকেও কাশ্মীরের জন্যও নাকি সাহায্য চাইছেন।
হাসিনা সরকারের পতনের পরই মৌলবাদ জাঁকিয়ে বসেছে বাংলাদেশে
শেখ হাসিনার সরকার বরাবর ভারতের প্রতি উদার মনোভাব দেখিয়ে এসেছে। কিন্তু সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে পাকিস্তানপন্থী জাতীয়তাবাদী দলগুলির প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে। শেখ হাসিনা চলে যাওয়ার পর বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা দেখা গেছে। হিন্দুদের মন্দির, বাড়িঘর ও সাংস্কৃতিক স্থান ভেঙে ফেলার খবর সামনে এসেছে। আর এই পরিস্থিতির মাঝেই রহমানি মুক্তি পেয়েছেন এবং তিনি একটি ভিডিওতে নেপাল, চীন এবং বাংলাদেশের সীমান্তের কাছে অবস্থিত শিলিগুড়ি করিডোর দখলের কথাও উল্লেখ করেছেন।
ভিডিও বার্তায় কি বলেছেন মৌলবাদী বাংলাদেশি নেতা?
সম্প্রতি, এক ভিডিও বার্তায় রহমানি বলেন, “বাংলাদেশ সিকিম বা ভুটানের মতো নয়। এটা ১৮ কোটি মুসলমানের দেশ।” এর পর তিনি বলেছিলেন যে চীনের সহায়তায় তিনি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিকে ভারতের বাকি অংশ থেকে আলাদা করবেন। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের দিকে এক পা বাড়ালে আমরা শিলিগুড়ি করিডোর বন্ধ করতে বলব। আমরা উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিকে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিতে বলব।”