ইন্ডিয়া হুড ডেস্কঃ নীরব মোদি ছিলেন ভারতের একজন প্রতিষ্ঠিত হীরা ব্যবসায়ী। তবে বর্তমানে তিনি ভারতের অন্যতম কুখ্যাত ঋণখেলাপি হিসেবে পরিচিত। কারণ তাঁর বিরুদ্ধে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের প্রায় ১৩,০০০ কোটি টাকার জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ হিসেবে টাকা নিয়ে তা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। তাই PNB গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছিল নীরব মোদির বিরুদ্ধে।
এই ঘটনার পরই ২০১৮ সালে নীরব মোদি ভারত ছেড়ে পালান। এই বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণখেলাপির পর দেশত্যাগের পরে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে আসেন তিনি। ভারতের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ED এবং সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন বা CBI তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি আর্থিক লেনদেন ও আর্থিক জালিয়াতি মামলার তদন্ত শুরু করে। আর এই তদন্তে এবার এক বড় আপডেট সামনে এল।
ফের নীরব মোদির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ED
সম্প্রতি, ED নীরব মোদির ২৯ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে। এই বাজেয়াপ্তকরণ বেআইনি আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত Prevention of Money Laundering Act, PMLA আইন অনুযায়ী করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পত্তি, যা তাঁর জালিয়াতি ও বেআইনি কার্যকলাপের অংশ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আগে নীরব মোদির ভারত ও বিদেশের বেশ কিছু মূল্যবান সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি, হীরা, শিল্পকর্ম এবং ব্যাংক একাউন্টে থাকা বিপুল পরিমাণ অর্থ।
একাধিক মামলা চলছে নীরব মোদির বিরুদ্ধে
নীরব মোদি ২০১৮ সালে ভারতের বাইরে পালিয়ে যান, যখন PNB তাঁর জালিয়াতির তথ্য প্রকাশ্যে আনে। তিনি প্রথমে লন্ডনে আশ্রয় নেন এবং এরপর থেকে ব্রিটেনেই আছেন। তাঁকে ভারতে ফেরানোর জন্য ভারত সরকার প্রয়াস চালাচ্ছে এবং এর জন্য ব্রিটেনের আদালতে একটি মামলাও চলছে। ২০২১ সালে যুক্তরাজ্যের একটি আদালত নীরব মোদিকে ভারতে ফেরানোর বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। তবে তাঁর আইনজীবীরা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন। তাঁদের দাবি, নীরব মোদি ভারতে ফিরে গেলে তার জীবন বিপন্ন হতে পারে। সেই সঙ্গে তাঁকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলেও দাবি করা হয়।
কেন দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন নীরব মোদি?
নীরব মোদির দেশত্যাগের পেছনে মূল কারণ ছিল তাঁর বিরুদ্ধে উঠা বিশাল অঙ্কের জালিয়াতির মামলা। জালিয়াতির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর ভারতের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলি তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা করে। সেই সময়ের আর্থিক চাপ এবং আইনগত ঝামেলা এড়াতেই তিনি দেশ ছেড়ে পালান বলে ধারণা করা হয়।