বন্যরা বনেই সুন্দর। লোকালয়ে বন্যপ্রাণী এসে গেলেই বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। এমনটা হলে মানুষ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনই ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয় কিছু নির্দোষ বন্যপ্রাণীকেও। যেভাবে কিছুদিন আগেই ঝাড়গ্রাম জেলায় হুলা মেরে একটি গর্ভবতী হাতিকে মেরে ফেলার মতো নৃশংস ঘটনা ঘটেছে। তবে এবার ঘটলো উল্টো ঘটনা। হিংস্র বন্যপ্রাণী আক্রমণে এবার ঘর-বার বন্ধ হয়ে গেল ৩৫ টি গ্রামের মানুষের।
উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জেলায় সম্প্রতি এই ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, মানুষ খেকো নেকড়ের আক্রমণে ৩৫ টি গ্রামের শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। এই অপ্রত্যাশিত আক্রমণের কারণে পুরো এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত কিছুদিন ধরেই নেকড়ের তাণ্ডব বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় বাইরে বেরোতে হলে প্রাণ হাতে নিয়ে বেরোতে হচ্ছে। তবে এবার বন্যপ্রাণীর তান্ডব রুখতে গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ নিলো রাজ্য সরকার।
রাতের বেলায় মানুষ খেকো নেকড়ের হানা
বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এই হিংস্র নেকড়েগুলি সাধারণত দল বেঁধে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে লাগোয়া গ্রামগুলির দিকে চলে আসছে। সুযোগ পেলেই নেকড়ের দল মানুষকে আক্রমণ করছে বলেও খবর সামনে এসেছে। এতে অনেকেই আহত হচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই রাতের বেলা আক্রমণের শিকার হয়েছেন। সেই কারণে উত্তরপ্রদেশের বাহরাইচ জেলার জঙ্গল লাগোয়া ওই ৩৫ টি গ্রামে এখন অন্ধকার নামলেই শুরু হচ্ছে আতঙ্কের পরিবেশ।
নেকড়ের হানা রুখতে সরকারের পদক্ষেপ
এই হিংস্র নেকড়ের আক্রমণের ঘটনা রুখতে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ কিছু ব্যসেস ব্যবস্থা নিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী প্রথমেই বাহরাইচের জেলা প্রশাসক ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সাথে জরুরি বৈঠক করেন। তিনি নির্দেশ দেন যাতে দ্রুত ওই নেকড়েগুলিকে শনাক্ত করে তাদের বনে ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিংবা প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় তাদের বন্দি করা হয়। পাশাপাশি, গ্রামবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশি টহল বাড়ানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সচেতন হতে বলেছেন যোগী আদিত্যনাথ
মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, যাতে ওই ৩৫ টি গ্রামের গ্রামবাসীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য প্রচার চালানো হয়। যাতে সবাই নেকড়ের আক্রমণ থেকে বাঁচার জন্য প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করতে পারে তার দিকেও নজর দিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে নেকড়ের অবস্থান শনাক্ত করার জন্য ড্রোন ও বিশেষ ক্যামেরা ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বন বিভাগের তরফ থেকে বিশেষজ্ঞ দল আনা হয়েছে যারা নেকড়েগুলির আক্রমণ ঠেকাতে কাজ করবে।