কলকাতাঃ বর্তমানে বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয়তা খেলার মধ্যে পড়ে ক্রিকেট। ইংল্যান্ডে এই খেলার জন্ম হলেও এখন অস্ট্রেলিয়া, ভারত সহ বিভিন্ন দেশে ক্রিকেট সর্বাধিক জনপ্রিয়। ক্রিকেটের ইতিহাসে অনেক রেকর্ড তৈরি হয়েছে এবং ভেঙেছে। কিন্তু এমন একটি লজ্জাজনক রেকর্ডও তৈরি হয়েছে, যেটি আজও অক্ষত রয়ে গেছেছে। জানলে অবাক হবেন যে একটি ম্যাচে ১ ওভার অর্থাৎ ৬ বলে সর্বাধিক ৭৭ রান হয়েছিল। এটি আজও ভাঙা সম্ভব হয়নি।
নিউজিল্যান্ডের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এই রেকর্ডটি তৈরি হয়েছিল। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৪ টি টেস্ট খেলা বার্ট ভ্যান্স এই রেকর্ড গড়েছিলেন। ওয়েলিংটনের বার্ট ভ্যান্স ১৯৯০ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যান্টারবারির বিরুদ্ধে একটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে একটি ওভার করেছিলেন। আর এই ওভারটি শেষ করতে তাঁকে ২২ টি বল করতে হয়েছিল। আর সেই ওভারে ভ্যান্স ৭৭ রান দিয়েছিলেন। আসুন জেনে নিই ক্রিকেটের এই এক ওভারের গল্প।
১৯৯০ সালে তৈরি হয়েছিল লজ্জার রেকর্ড
ক্রিকেটের ইতিহাসে সবথেকে বেশি রান দেওয়া এই ওভারটি করা হয় ক্রাইস্টচার্চে। ১৯৯০ সালে ক্যান্টারবারির বিপক্ষে ওয়েলিংটনের শেল ট্রফি ম্যাচের শেষ দিনে এই রেকর্ড তৈরি হয়। এটি ছিল ওয়েলিংটনের মরশুমের শেষ খেলা। এই ম্যাচে ওয়েলিংটন দল প্রথমে ব্যাট করে তাদের ইনিংস ঘোষণা করার পর ক্যান্টারবেরিকে ৫৯ ওভারে ২৯১ রানের টার্গেট দেয়। ক্যান্টারবারির শুরুটা ছিল খুব খারাপ। মাত্র ১০৮ রানে তার ৮ উইকেট পড়ে যায়। এই কারণে কারণে দর্শকরা ভাবছিলেন যে ওয়েলিংটন সহজেই এই ম্যাচ জিতে যাবে। কিন্তু খেলা তখনো শেষ হয়নি।
১ ওভারে ২২ টি বল করে ৭৭ রান দেন বার্ট ভ্যান্স
ওয়েলিংটনের অধিনায়ক ম্যাচের সহজ পর্যায়ে ব্যাটসম্যান বার্ট ভ্যান্সকে বল করানোর সিদ্ধান্ত নেন। প্ল্যান এটাই ছিল যে বিপক্ষের ব্যাটসম্যান জার্মান লি এবং রজার ফোর্ড সহজ বোলিংয়ের বিপক্ষে ভুল করবেন এবং আউট হয়ে যাবেন। কিন্তু ক্যাপ্টেনের এই সিদ্ধান্ত যে বুমেরাং হয়ে ফিরে আসবে, তা কেউ হয়তো স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি সেদিন। ওভারের শুরুতে বার্ট খুব খারাপ বোলিং করেন। একটানা নো বল করতে থাকেন তিনি। প্রথম ১৭ টি বলের মধ্যে মাত্র একটি বল সঠিক ছিল। ভ্যান্স এই ওভারে মোট ২২ টি বল করেন এবং ৭৭ রান দেন।
শেষমেষ ড্র হয়ে যায় এই নাটকীয় ম্যাচ
ভ্যান্সের এই ফ্লপ ওভারের পর শেষ ওভারে জয়ের জন্য ক্যান্টারবেরি দলের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। জার্মান লি প্রথম পাঁচ বলে ১৭ রান করেন। কিন্তু শেষ বলে তিনি কোনো রান করতে পারেননি। তাই শেষমেষ ম্যাচটি ড্র হয়। সেই সঙ্গে একটি নাটকীয় ম্যাচ শেষ হয়, যে ম্যাচের কথা আজো সকলের মনে রয়ে গেছে।