প্রীতি পোদ্দার: পুজোর আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। তবে চলতি বছরে উৎসবের মেজাজ এবার সম্পূর্ণ আলাদা। কারণ মানসিক দিক থেকে সম্পূর্ণ রূপে ভেঙে পড়েছে গোটা রাজ্য। আরজি কর কাণ্ডে তিলোত্তমার সুবিচারের আশায় এখনও সকলে অপেক্ষা করে রয়েছে। এইমুহুর্তে জুনিয়র চিকিৎসকরা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে পুনরায় কাজে যোগদান করলেও আন্দোলন এখনই শেষ হচ্ছে না তাঁদের। তাইতো সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী নির্দেশের দিকে নজর জুনিয়র চিকিৎসকদের। অন্যদিকে রাজ্যের সরকারী কর্মীদের জন্য পুজোর আগেই আরও বড় সুখবর দিল রাজ্য সরকার।
রাজ্য সরকারের হেলথ স্কিমে আমূল পরিবর্তন!
গত ১৩ সেপ্টেম্বর, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের অর্থ দপ্তরের অধীনে থাকা মেডিকেল সেলের তরফ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। সেই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের হেলথ স্কিমের আওতায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বেশ কিছু সুবিধা পেতে চলেছে। অর্থাৎ এই স্কিম সরকারী কর্মীদের কাছে অনেকটাই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করতে চলেছে। জানা গিয়েছে নতুন করে এই স্কিমে বেশ কিছু ডায়গনস্টিক সেন্টার এবং চিকিৎসা কেন্দ্র অন্তর্ভুক্ত করা হতে চলেছে। শুধু তাই নয় এই সরকারি স্বাস্থ্য প্রকল্পে এবার আরও সুবিধা পেতে চলেছে সরকারি এবং অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। এতদিন স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায় থাকা সরকারি কর্মী এবং অবসরপ্রাপ্ত পেনশন প্রাপকরা ১৭ টি বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করতে পারত। এবার থেকে আরও নতুন ৬টি রোগের চিকিৎসা করা যাবে এই স্বাস্থ্য প্রকল্পের আওতায়।
৬টি নতুন রোগের চিকিৎসা সহ নয়া চিকিৎসা কেন্দ্র
জানা গিয়েছে, যে সকল চিকিৎসা কেন্দ্র বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেগুলি হল বজবজের এমজি রোডে থাকা জগন্নাথ গুপ্তা ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড হসপিটাল, খড়দার শঙ্কর জ্যোতি চক্ষু হাসপাতাল, শরৎ বোস রোডের পাল্স ডায়গনস্টিক প্রাইভেট লিমিটেড, দমদমের থেইসম আলট্রাসাউন্ড সেন্টার, শেওড়াফুলির নারসিসাস মেডিক্যাল সেন্টার। নতুন যে আরও যে ৬টি রোগের চিকিৎসার সুবিধা এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে স্কিৎজোফ্রেনিয়া, বাইপোলার এফেক্টিভ ডিসঅর্ডার, মেজর ডিফেক্টিভ ডিসঅর্ডার প্রভৃতি। এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সাইক্রিয়াটিকসে এমডি বা ডিপ্লোমাধারি কোনও চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন থাকলে সেক্ষেত্রে এই রোগের ওষুধের দাম পাওয়া যাবে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট টাকার উপর চিকিৎসার জন্য ক্যাশলেশের সুবিধাও পাওয়া যায় এই প্রকল্পে।
হেলথ স্কিমের সুবিধা নিয়ে কড়াকড়ি ঘোষণা!
কিন্তু অনেকের মনে এই হেলথ স্কিম সম্পর্কে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন জাগছে। তার মধ্যে অন্যতম হল কর্মরত কোনও সরকারি কর্মীর যদি মৃত্যু হয় তাহলে সেই ক্ষেত্রে তাঁর পরিবারের সদস্যরা সেই হেলথ স্কিমের সুবিধা পাবেন কি না। সেই বিষয়ে এবার রাজ্য সরকার সরাসরি জানালেন যে সকল রাজ্য সরকারি কর্মীদের পরিবার হেলথ স্কিমের অধীনে আছেন, কর্মরত অবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্মীর মৃত্যু হলেও তাঁর পরিবার সেই সুবিধা পেতে থাকবে যদি সংশ্লিষ্ট কর্মীর পরিবারের নামে ফ্যামিলি পেনশন থাকে তা হলেই হেল্থ স্কিমের সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
যদি সংশ্লিষ্ট মৃত সরকারি কর্মীর পরিবারের কেউ ফ্যামিলি পেনশনের অন্তর্গত না থাকেন এবং যদি ফ্যামিলি পেনশনার এর থেকে থাকে এবং তাঁরও মৃত্যু হয়ে গিয়ে থাকে, তাহলেও হেলথ স্কিমে তাঁর স্থানে অন্য কারও নাম যোগ করা যাবে না। এছাড়াও কর্মরত অবস্থায় কোনও কর্মীর মৃত্যুর পর যদি তাঁর জায়গায় কেউ ‘কমপ্যাশনেট নিয়োগ’ পান, তাহলে সে নবনিযুক্ত কর্মীর ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যরা হেলথ স্কিমের সুবিধা পাবেন।