দেবপ্রসাদ মুখার্জী: ব্রিটিশ আমলে কলকাতা ছিল ভারতের রাজধানী। তবে সময়ের সঙ্গে রাজধানীর তকমা হারিয়েছে তিলোত্তমা নগরী। এখনো প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে পূর্ব ভারতের এই শহর। আর এবার কলকাতার নাম আরো বেশি উজ্জ্বল হতে চলেছে। কারণ, আনন্দের শহর কলকাতায় এবার তৈরি হবে এমন এক জিনিস, যা পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি দেশের প্রযুক্তি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অদূর ভবিষ্যতে কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরি হতে চলেছে।
সম্প্রতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে কলকাতায় একটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। রবিবার প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। মোদী চতুর্দেশীয় অক্ষ বা ‘কোয়াড’ সদস্য রাষ্ট্রগুলির বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকায় গিয়েছিলেন, সেখানেই এই বৈঠকের সময় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা নিয়ে আলোচনা হয় বলে খবর।
কলকাতায় তৈরি হবে সেমিকন্ডাক্টর
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠকে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানেরা জাতীয় নিরাপত্তা, টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তির অগ্রগতি, এবং দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক সেন্সিং এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের কারখানার পরিকল্পনা এই প্রেক্ষাপটে উঠে আসে। জানা গেছে, নতুন কারখানাটি ইনফ্রারেড, গ্যালিয়াম নাইট্রাইড এবং সিলিকন কার্বাইড সেমিকন্ডাক্টর তৈরির জন্য প্রতিষ্ঠিত হবে, যা ভারতের সেমিকন্ডাক্টর মিশনের সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ। ‘গ্লোবাল ফাউন্ডারিজ’ নামে নিউ ইয়র্কের একটি বহুজাতিক সংস্থা কলকাতায় সেমিকন্ডাক্টর কারখানা স্থাপনের দায়িত্ব পেতে পারে। এই প্রকল্পটির নাম হতে পারে ‘জিএফ কলকাতা পাওয়ার সেন্টার’।
সেমিকন্ডাক্টর কি কাজে লাগে?
সেমিকন্ডাক্টর হলো এক ধরনের বিশেষ বস্তু, যা নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ পরিবাহী হিসেবে কাজ করতে পারে। এটি মূলত বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত হয়। মোবাইল, ক্যামেরা, ল্যাপটপ, এবং টেলিভিশনের মতো ডিভাইসগুলিকে সচল রাখতে যেসব ‘চিপ’ বা ‘মাইক্রোচিপ’ ব্যবহার হয়, সেই চিপ তৈরিতে সেমিকন্ডাক্টর অপরিহার্য একটি উপাদান। তাই এখন যখন গোটা সভ্যতা প্রযুক্তির পিছনে দৌড়াচ্ছে, তখন গোটা বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টরের গুরুত্ব ব্যাপকভাবে বাড়ছে।
আগে ৩ টি সেমিকন্ডাক্টর কারখানার অনুমোদন দিয়েছে সরকার
প্রসঙ্গত, এর আগে তিনটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানার জন্য অনুমোদন দিয়েছিল ভারত সরকার। এছাড়াও, গুজরাতের সানন্দে আরেকটি সেমিকন্ডাক্টর কারখানা তৈরির অনুমোদনও দিয়েছে কেন্দ্র। এবার কলকাতায় এই নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতের প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে।