দেবপ্রসাদ মুখার্জী: ঘুষখোর পুলিশকর্মীকে কারাবাসের সাজা দিলো আদালত। মাত্র ৫০০ টাকা ঘুষ চাওয়ার অপরাধে ২০ গুণ জরিমানা দিতে হবে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীকে। সেই সঙ্গে রিটায়ারমেন্টের পরে ৫ বছর জেলও খাটতে হবে তাঁকে। কারণ, ১০ বছর পর মামলার রায় দিলো আদালত। এই রায় শুনলে আপনিও হয়তো ভাববেন, এখনো ‘জাস্টিস’ দেয় আদালত।
গুজরাটের মরবি জেলার একটি আদালত সম্প্রতি অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল অমরত মাকওয়ানাকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০,০০০ টাকা জরিমানা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। এই মামলাটি শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে, যখন মাকওয়ানা মালিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন। তিনি পাসপোর্ট যাচাই প্রক্রিয়ার সময় ৫০০ টাকা ঘুষ চেয়েছিলেন পূজা হেডাউ নামে এক মহিলার কাছে। তারপর থেকেই মামলাটি চলছিল আদালতে।
পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের জন্য ঘুষ চেয়ে বিপাকে পড়েছিলেন কনস্টেবল
ঘটনাটি ঘটে ২০১৪ সালের ১৭ মার্চ। ওইদিন পাসপোর্ট যাচাইয়ের জন্য পূজা হেডাউকে মালিয়া থানা থেকে ডাকা হয়। সেখানে কর্মরত কনস্টেবল অমরত মাকওয়ানা তাঁর স্বাক্ষর নেওয়ার পরে তাঁকে ৫০০ টাকা দিতে বলেন। পূজা তখন টাকা দিতে অস্বীকার করেন এবং পরবর্তীতে তাঁর দেওর মনোজ হেডাউ এন্টি করাপশন ব্যুরোতে ওই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর এন্টি করাপশন ব্যুরো একটি ফাঁদ পাতে এবং ১৮ মার্চ ২০১৪ তারিখে মাকওয়ানাকে ঘুষ নেওয়ার সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে।
১০ বছর পর আদালতের রায়ে বিচার পেলেন মহিলা
এই মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতে ৭ টি মৌখিক এবং ৩৫ টি লিখিত প্রমাণ দাখিল করা হয়। দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে, আদালত মাকওয়ানাকে দোষী সাব্যস্ত করে এবং ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দেয়। এছাড়াও তাঁকে ১০,০০০ টাকা জরিমানা দিতেও বলা হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, মাকওয়ানা জরিমানা দিতে না পারলে তাঁকে আরও এক মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
অবসরের পর এবার জেল খাটতে হবে কনস্টেবলকে
মাকওয়ানা ইতিমধ্যেই অবসর গ্রহণ করেছেন, এবং আদালতের রায় অনুযায়ী তাঁকে এখন জেল খাটতে হবে। এই ঘটনাটি গুজরাটের দুর্নীতি দমন নীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা যায়, এই মামলার মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের ঘুষ নেওয়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছে সরকার ও প্রশাসন।