প্রীতি পোদ্দার, বাঁকুড়া: আরজি কর কাণ্ডের আগুনে এখনও উত্তপ্ত গোটা রাজ্য রাজনীতি। অনেকটা সময় কেটে গেলেও তিলোত্তমার এখনও পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিচার পায়নি। সেই কারণে লড়াই এখনও জারি গোটা রাজ্যে। অন্যদিকে আর জি কর কাণ্ডের আবহে ফের আরও একবার থ্রেট কালচার উঠে এল খবরের শিরোনামে। এতদিন জানা গিয়েছিল যে মেডিক্যাল কলেজগুলিতে এই থ্রেট কালচার সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু না, এই থ্রেট কালচার এখন মেডিক্যাল কলেজগুলির সীমা ছাড়িয়ে সাধারণ কলেজেও রীতিমত জাঁকিয়ে বসেছে।
আরজি কর আন্দোলনে যোগদান করায় শাস্তি!
জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া জেলার সারদামণি মহিলা কলেজের ভূগোল বিভাগের পঞ্চম সেমিস্টারের দুই ছাত্রী অপর্না মণ্ডল ও প্রেয়সী টুডু কয়েকদিন আগে আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে কলেজে প্রতিবাদ কর্মসূচী করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেই কর্মসূচীর অনুমতি কলেজ কর্তৃপক্ষ না দেওয়ায় কলেজের গেটের বাইরের রাস্তায় তাঁরা প্রতিবাদী স্ট্রিট পেইন্টিং করেন। শুধুমাত্র সেই অপরাধে ওই দুই ছাত্রীর উপর নেমে আসে শাস্তির খাঁড়া। সূত্রের খবর, ওই দুই ছাত্রী পরে কলেজে ভূগোল বিভাগে ক্লাস করতে গেলে বিভাগীয় প্রধান তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা তাঁদের অপমান করে ক্লাস থেকে বের করে দেন।
অন্য যুক্তি দিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা!
পরে দুই ছাত্রী সোশ্যাল মাধ্যমে সেই বিষয়টি তুলে ধরেন এবং প্রতিবাদ জানান। এবং এদিন সকাল দশটায় কলেজ গেটের সামনে ঘেরাও কর্মসূচির আহ্বান জানিয়েছেন প্রতিবাদী ওই দুই ছাত্রী। যদিও রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামল সাঁতরা অবশ্য অন্য যুক্তি দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ওই দুই ছাত্রী প্রত্যক্ষভাবে SUCI-এর সঙ্গে যুক্ত। ক্লাসের মধ্যে ওই দুই ছাত্রী দলীয় লিফলেট ছড়িয়ে ছাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে উত্যক্ত করতো। বেশ কয়েকজন ছাত্রী লিখিতভাবে সেই অভিযোগও জানান তাঁকে। তাই সেই ঘটনার জন্যই ওই দুই ছাত্রীকে ক্লাস না করার কথা বলা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছুদিন আগে তৃণমূলের কর্মসূচিতে যোগ না দেওয়ায় বেশ কয়েকজন ছাত্রীকে কলেজের শৌচালয়ে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। তাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক ছাত্রী। আর এবার আরজি কর নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় এমন হেনস্থা হতে হল দুই ছাত্রীকে। যা নিয়ে প্রবল ধিক্কার জানাচ্ছে রাজ্যের সাধারণ মানুষ।