প্রীতি পোদ্দার: ২০২৩ সালে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের বেশ কিছু সংশোধনী করে মোদি সরকার। আসলে ডিজিটাল ও সমাজমাধ্যমে যে ভুয়ো ও অসত্য খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করছে তা রোধ করার জন্যই ফ্যাক্ট চেকিং ইউনিট তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু এই ফ্যাক্ট চেকিং ইউনিট অনেকের কাছেই গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছিল না।
বোম্বে হাইকোর্টে মামলা ঠুকেছিল কুণাল!
জানা গিয়েছে, গত ২০ মার্চ বৈদ্যুতিন এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়েছিল, “তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর অধীনে ফ্যাক্ট চেক ইউনিটকে কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্যাক্ট চেক ইউনিট হিসাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। আর সেই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের একদিন পরেই তড়িঘড়ি এই ফ্যাক্ট চেকিং তৈরির উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে বম্বে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করছিলেন কৌতুকাভিনেতা কুণাল কামরা। তাঁর আবেদন ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারের এই নতুন সংশোধিত নিয়মে আদালতের বৈধতা না পাওয়া পর্যন্ত যেন স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি কুণাল কামরার আবেদনের শুনানি করেছিল বম্বে হাইকোর্টের ডাবল বেঞ্চ। আর এই দ্বৈত বেঞ্চ বিচারক হিসেবে বিচারপতি গৌতম প্যাটেল এবং বিচারপতি নীলা গোখল। কিন্তু দুই বিচারপতির বেঞ্চ থেকে বিভক্ত রায় পাওয়া যায়।বিচারপতি প্যাটেল যখন এই নিয়মগুলি বাতিল করার রায় দিয়েছিলেন, তখন বিচারপতি গোখলে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়মগুলিকে সঠিক বলে মেনে নিয়েছিলেন। আসলে বিচারপতি প্যাটেল বলেছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারের এই নিয়মগুলি খুব বেশি সেন্সরশিপ প্রয়োগ করছে যার ফলে বাক স্বাধীনতায় পরোক্ষভাবে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তাই এই বিভক্ত সিদ্ধান্তের কারণে সেই সময় কোনো রায় বের হয়নি এই শুনানি মামলায়।
মামলার রায়ে কী জানালেন বিচারপতি?
অবশেষে এই সিদ্ধান্তটি তৃতীয় বিচারকের মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছিল। এবং গতকাল অর্থাৎ শুক্রবার, হাইকোর্টের বিচারপতি এ এস চান্দুরকর কেন্দ্রীয় সরকারের ফ্যাক্ট চেকিং ইউনিটকে পুরোপুরি বাতিল করে দিয়েছে বম্বে হাইকোর্ট। অর্থাৎ গত বছর, ২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার তথ্যপ্রযুক্তি নিয়মে যে সংশোধনী এনেছিল, সেই সংশোধনীকে অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়ে বাতিল করে দিয়েছেন বম্বে হাইকোর্টের বিচারপতি। এবং তিনি বলেছেন, “২০২৩ সালে কেন্দ্রীয় সরকার, তথ্যপ্রযুক্তি নিয়মে যে সংশোধন করা হয়েছিল, তা সংবিধানের ১৪ (সমান অধিকার) ও ১৯ (মত প্রকাশের স্বাধীনতা) ধারার পরিপন্থী।”