কলকাতাঃ বাংলাদেশের মুদ্রা, বাংলাদেশি টাকা, একসময় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম স্থিতিশীল মুদ্রা ছিল। তবে দেশে গণঅভ্যুত্থানের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে বাংলাদেশের মুদ্রার দামের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে ভারতীয় রুপির তুলনায় টাকার মানের ওঠানামা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর এবার বাংলাদেশের টাকার মান ইন্ডিয়ান রুপি-র তুলনায় অনেকটাই নীচে নেমে গেল।
ভারতীয় রুপির তুলনায় বাংলাদেশের টাকার মান ইতিহাসের বিভিন্ন সময়ে আলাদা আলাদা ছিল। এই বিনিময় হার আন্তর্জাতিক বাজারের উপর নির্ভর করে। আর এই উত্থান-পতন দেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে প্রভাব ফেলে। যেহেতু বাংলাদেশ ভারতের সাথে প্রচুর পরিমাণে পণ্য আমদানি করে, তাই রুপির দাম বৃদ্ধির পেলে আমদানির খরচ বেড়ে যায়। এর ফলে দেশে বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়।
বাংলাদেশের গণঅভ্যুত্থান এবং অর্থনৈতিক সংকট
বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে দেশের অর্থনীতি সাধারণভাবেই অস্থির হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যায়। একইসঙ্গে এইসকম সময়ে সরকারের অনিশ্চয়তা এবং সম্ভাব্য নীতির পরিবর্তনের আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা দেশের অর্থনীতিতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এছাড়াও এই সময়ে ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানও অস্থিরতার মুখে পড়ে। পাশাপাশি গণঅভ্যুত্থানের সময় অনেক ধনী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান তাদের মূলধন বিদেশে সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। যার ফলে দেশের মুদ্রার ওপর চাপ বৃদ্ধি পায় এবং মুদ্রার মান আরও কমে যায়।
বাংলাদেশি টাকা ও ইন্ডিয়ান রুপি-র দামের পার্থক্য কত?
গণঅভ্যুত্থানের পর ১ বাংলাদেশি টাকা ০.৭০ ইন্ডিয়ান রুপি-র সমান হয়েছে। অর্থাৎ, ১ ইন্ডিয়ান রুপি এখন ১.৪৩ বাংলাদেশি টাকার সমান। সেই হিসেবে আমরা যদি ২০০০ বাংলাদেশি টাকার হিসেব ধরি, তাহলে সেটি ১,৪০১ ইন্ডিয়ান রুপির সমান। একইভাবে, ২৫,০০০ বাংলাদেশি মুদ্রা এখন ১৭,৫৪০ ভারতীয় টাকার সমান।
টাকার দাম পড়লে আমদানি-রপ্তানির সমস্যায় পড়বে বাংলাদেশ
বাংলাদেশি টাকার দাম কমে যাওয়ার ফলে ভারতসহ অন্যান্য দেশ থেকে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের খরচ বৃদ্ধি পাবে। এটি যা অভ্যন্তরীণ বাজারে পণ্যের মূল্যস্ফীতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তবে এটির দলে এটি রপ্তানি খাতে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যায়। কারণ বিদেশী ক্রেতাদের জন্য বাংলাদেশের পণ্য অপেক্ষাকৃত সস্তা হয়ে যায়। তবে, এই সুবিধা দীর্ঘস্থায়ী না হলে দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।