নয়া দিল্লিঃ একে তো মূল্যস্ফীতির জ্বালা, অন্যদিকে আবার জ্বালানি তেলের উর্ধ্বমুখী দাম, সবকিছু সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষের। শাকসবজি থেকে শুরু করে মাছ মাংস সবকিছুই দাম যেন এখন ঊর্ধ্বমুখী হয়ে রয়েছে। দাম কমার বদলে উল্টে বেড়েই চলেছে যেন। তেলের ক্ষেত্রেও তাই। সব থেকে বড় কথা যাদের দু’চাকা বা চার চাকা গাড়ি রয়েছে তারাই একমাত্র বোঝে জ্বালানির জ্বালা কাকে বলে। কিন্তু আজ এই প্রতিবেদনে আপনাদের এমন একটি বিকল্প সম্পর্কে বলা হবে যেটি সম্পর্কে শুনলে আপনি হয়তো আকাশ থেকে পড়বেন। ভাববেন এতদিন কেন এই জ্বালানি আপনি আপনার গাড়িতে ভরেননি।
এমন একটি ফিউল বা জ্বালানি তেল রয়েছে যেটি আপনি পেট্রোলের বদলে নিজের গাড়িতে ভরতে পারেন। এদিকে এই ফিউল ভরতে আপনার খরচ খুব একটা বেশি হবে না। যে কারণে প্রতি মাসেই আপনি অনেক টাকা সঞ্চয় করতে পারেন। দেশে ইতিমধ্যে বিভিন্ন গাড়ি প্রস্তুতকারী কোম্পানি ফ্লেক্স ফিউল সমর্থন করে এমন গাড়ি লঞ্চ করেছে। এতে করে মাস প্রতি পেট্রোলের খরচ অনেকটাই কমবে বৈকি। এখন আপনিও নিশ্চয়ই ভাবছেন যে এই ফ্লেক্স ফিউল বাঁ জ্বালানি জিনিসটা কী?তাহলে চোখ রাখুন আজকের এই প্রতিবেদনটির ওপর।
ফ্লেক্স ফিউল কী?
আসলে ফ্লেক্সিয়াল হল পেট্রোলের সঙ্গে মিথানল মিশিয়ে একটি বিশেষ জ্বালানি তৈরি করা। বর্তমান সময়ে ফ্লেক্স ফুয়েলকে পেট্রোল-ডিজেলের বিকল্প হিসেবে দেখা হচ্ছে। পেট্রোলের পাশাপাশি মিথানল ও ইথানলের সঙ্গে মিশিয়ে এই জ্বালানি প্রস্তুত করা হয়। এক রিপোর্ট অনুযায়ী, আগামী দিনে এই জ্বালানি E20 এবং E50-তে রূপান্তরিত হবে।
E20 পেট্রোল কী?
নিশ্চয়ই ভাছেন যে E20 পেট্রোল জিনিসটা ঠিক কী? আসলে এই E20 পেট্রোল তৈরি করতে ২০ শতাংশ ইথানল পেট্রোলে মেশানো হয়। এটি এক ধরনের পেট্রোল যা সাধারণ পেট্রোলের চেয়ে সস্তা। এই পেট্রোল তৈরিতে ৮০ শতাংশ পেট্রোল ও ২০ শতাংশ ইথানল ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে খুব সীমিত পেট্রোল পাম্পে এই ধরনের পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে। জিও-বিপি পেট্রোল পাম্প দেশের প্রথম সংস্থা যারা এই ধরনের পেট্রোল বিক্রি করেছে। দেশের যাতে পেট্রোলের ওপর নির্ভরশীলতা কমানো যায়, সেজন্য সরকারও এ ধরনের জ্বালানির প্রসার ঘটাতে চাইছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
কীভাবে টাকা বাঁচাবেন?
আপনার মনেও প্রশ্ন জাগতে পারে যে কীভাবে টাকা বাঁচাবেন? এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, এই বিশেষ E20 পেট্রোল তৈরিতে ৮০ শতাংশ পেট্রোল ব্যবহার করা হয়। এই জাতীয় পেট্রোলের ৮০ শতাংশের দাম প্রতি লিটারে ৭৬.৮০ টাকা হবে। অন্যদিকে ইথানলের দাম লিটার প্রতি প্রায় ৫৫ টাকা।
এক্ষেত্রে ২০ শতাংশ ইথানলের মোট দাম লিটার প্রতি ১১ টাকা। এক্ষেত্রে এক লিটার E20 পেট্রোলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৮৭.৮০ টাকা। এক্ষেত্রে দিল্লিতে বিক্রি হওয়া পেট্রোলের তুলনায় লিটার প্রতি ৮ টাকা সস্তা হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী দিনের সব পেট্রোল পাম্পেই যদি এই তেল ব্যবহার করা হয় তাহলে সাধারণ মানুষের পকেটে চাপ অনেকটাই কমবে। একই সঙ্গে সারা বছর হাজার হাজার টাকা সাশ্রয় করতে পারে এই জ্বালানি।