নতুন করে জমি নিয়ে আন্দোলনে সরব হয়েছে সিঙ্গুরের মানুষজন। সিঙ্গুরে চাষের অযোগ্য জমিকে চাষের উপযোগী করতে দফায় দফায় সেখানে আন্দোলন, বিক্ষোভ চলছে। সেইসঙ্গে জমি ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বানও জানানো হচ্ছে সরকারের কাছে। তবে এবার এই সিঙ্গুরের জমি সম্পর্কিত এমন এক মন্তব্য প্রকাশ্যে উঠে এল যা শুনলে চমকে যাবেন আপনিও। একপ্রকার সিঙ্গুরের জমি নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে হাটে হাড়ি ভাঙলেন সেখানকার মানুষ। হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন।
সিঙ্গুরে ফের জমি আন্দোলন
বেশ কিছু সময় ধরে সিঙ্গুরে নতুন করে যেন জমি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেছেন কৃষকরা। এমনকি অনেককে বলতে অবধি শোনা গিয়েছে ‘টাটার কারখানা হলেই ভালো হত’। একসময় এই সিঙ্গুর বাংলার ইতিহাসকেই যেন বদলে রেখে দিয়েছিল। এই সিঙ্গুরে জমি আন্দোলনে যত কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। এই সেই সিঙ্গুর যেখানে জমি না মেলায় টাটা কারখানা গড়ে তুলতে পারেনি। এক কথায় এই সিঙ্গুর বহু সংগ্রামের সাক্ষী থেকেছে। তবে আবারও নতুন করে সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে এই সিঙ্গুর। এবার এই সিঙ্গুরের ‘সত্য’ ফাঁস করে সকলকে চমকে দিলেন সিঙ্গুরের কৃষক আন্দোলনের প্রথমসারির নেতা তথা তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মহাদেব দাস।
সিঙ্গুরের জমি নিয়ে বিস্ফোরক তথ্য
তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি মহাদেব দাস জানিয়েছেন, এক সময় একশো শতাংশ জমিই চাষ যোগ্য হিসাবে জমি ফেরত পেয়েছেন বলে বিবৃতি দিতে হত তাদের। দলের সন্মান রক্ষার জন্যই এই বিবৃতি দিতে হত বলে দাবি মহাদেব দাসের। স্বাভাবিকভাবেই ২৬-এর বিধানসভা ভোটের আগে কৃষক আন্দোলনের নেতার দাবি ঘিরে সর্বত্র শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যে সিঙ্গুর বান্ধ্যা জমি পুনর্ব্যবহার কমিটির সদস্যরা বেশ কয়েক দফা দাবি নিয়ে নবান্নের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। বর্তমানে সিঙ্গুরে কয়েকশো একর জমি খারাপ অবস্থাতেই রয়ে গিয়েছে। এখনও অবধি সেগুলিকে চাষযোগ্য করে দেওয়া হয়নি। আর এই নিয়ে সকলের যত অভিযোগ। আর এই ব্যাপারটি স্বীকার করে নিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্নার। তাঁর মতে, “৬৫০ থেকে ৭০০ একর জমি বন্ধ্যা হয়ে পড়ে আছে। কিন্তু স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেছেন ৯১ শতাংশ জমিতে চাষ হচ্ছে। এতেই মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। সেই সমস্যা মেটাতে চাইছি। বিধায়কের দাবি কতটা সত্য সেটার জন্যই কমিটির পক্ষ থেকে আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি। তিনি বিষয়টা বিবেচনা করে দেখুন।”
এদিকে মহাদেব দাস জানান, “বাম সরকারের আমলে জমি অধিগ্রহণ হয়। সরকার পরিবর্তন হয়, নতুন সরকার আসার পরে জমি ফেরতের জন্য আইন আনা হয়েছিল। সেই আইন করেও জমি ফেরত দিতে গিয়েও সরকার আটকে গিয়েছিল। সর্বোপরি সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অধিগ্রহণ বাতিল হয়েছে। জমিকে পূর্বের ন্যায় কৃষকের হাতে ফেরত দেওয়ার রাজ্য সরকারের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জমি চাষযোগ্য হওয়ার আগেই সরকার এখান থেকে হাত গুটিয়ে চলে যায়।”