টানা দ্বিতীয়বার ডুরান্ড কাপের ফাইনালে উঠেছিল কলকাতার জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব মোহনবাগান। ফের সেই যুবভারতী স্টেডিয়ামে ছিল ফাইনাল ম্যাচ। গতবার এই স্টেডিয়ামে ডুরান্ড ট্রফি হাতে তুলেছিলেন সবুজ-মেরুনের দামাল ছেলেরা। তবে এবার হয়তো সময়ের হিসেব ছিল অন্যদিকে। তাই ঘরের মাঠে আশা জাগিয়েও ফাইনাল হারলো মোহনবাগান। জন আব্রাহামের দল নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের কাছে ট্রাইব্রেকারে ম্যাচটি হারতে হল সবুজ-মেরুনকে।
শনিবার কলকাতায় ডুরান্ড কাপের ফাইনাল ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান ও নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড। গতবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আত্মবিশ্বাস এবং ঘরের মাঠে দর্শকদের সমর্থন- এইসব নিয়ে ম্যাচের প্রথমার্ধে দাপট দেখিয়ে একজোড়া গোলে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান। কিন্তু ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের ফুটবলাররা। গোল শোধ করে ট্রাইব্রেকার থেকে ম্যাচ ছিনিয়ে ডুরান্ড জিতলো উত্তর-পূর্ব ভারতের এই ক্লাব। কিন্তু কেন হারতে হল মোহনবাগানকে? চলুন, এর নেপথ্যে ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ কারণ খুঁজে দেখা যাক।
কোচের ভুল সাবস্টিটিউশনের সিদ্ধান্ত
ফাইনাল ম্যাচের ভুল সময়ে ভুল পরিবর্তন করার কারণে হয়তো এভাবে ডুবতে হল মোহনবাগানকে। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগেজের চোট পাওয়ার কারণে সেন্টার ব্যাক দীপেন্দুর জায়গায় উইং ব্যাক আশিষ রাইকে নামানো মোহনবাগানের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার সালহাকে দ্বিতীয়ার্ধে তুলে নেয় ক্লাব। পাশাপাশি, সুয়ার্টকে তুলে অভিষেককে নামায়। এইসব কারণে মোহনবাগানের ডিফেন্স দুর্বল হয়ে পড়ে।
মোহনবাগান প্লেয়ারদের ফিটনেসের অভাব
মোহনবাগানের প্রত্যেক খেলোয়াড় ম্যাচের প্রথমার্ধে ব্যাপক চনমনে হয়ে খেলছিলেন। তার প্রতিফলন দেখা গেছে স্কোরবোর্ডে। কিন্তু ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিতীয়ার্ধে প্রত্যেকের ফিটনেসের অভাব লক্ষ্য করা গেছে। তাই একজোড়া গোলে এগিয়ে থেকেও ম্যাচ হারতে হল মোহনবাগানকে।
সবুজ-মেরুনের দুর্বল ডিফেন্স
ডুরান্ড কাপের ফাইনাল ম্যাচে ডিফেন্ডার আনোয়ার আলির অনুপস্থিতি হাড়ে হাড়ে টের পেল সবুজ মেরুন শিবির। মাঠে ডিফেন্স দুর্বল ছিল বাগানের। আর দ্বিতীয়ার্ধে সেটি আরো দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই কারণে এই ম্যাচে শেষমেষ আত্মসমর্পণ করতেই হল মোহনবাগানকে।
নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের প্লেয়ারদের সক্রিয়তা
শুধুমাত্র মোহনবাগানের ব্যর্থতা নয়, এই ম্যাচে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের খেলোয়াড়দের উদ্যম দেখে সত্যিই অবাক হতে হয়। যেভাবে যুবভারতীতে উপস্থিত হাজারো মোহনবাগান সাপোর্টারের মাঝে তাঁরা সাহসিকতার ফুটবল খেলেছে, তা প্রশংসনীয়। এই কারণেই হয়তো তাঁরা এই জয় পেয়েছে।
নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের গোলকিপারের ভূমিকা
ডুরান্ড কাপের ফাইনাল ম্যাচে ফলাফল নির্ধারণ হয় ট্রাইব্রেকারে। তাই এই ম্যাচে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেডের গোলকিপার গুরমিত সিংয়ের একটা বড় অবদান ছিল। বলে বাহুল্য, এতদিন বিশাল মোহনবাগানের হয়ে যে কাজ করে এসেছেন, ফাইনালে সেই কাজটিই করলেন গুরমিত।