নয়া দিল্লিঃ স্বাধীনতার পর থেকেই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে একাধিকবার যুদ্ধ করতে হয়েছে ভারতকে। আর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে যে দেশের সম্পর্ক খারাপ হয়, সে দেশকে স্বাভাবিকভাবেই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করতে হয়। ভারতও সেই কাজটি করে যাচ্ছে। ভারত প্রত্যেক বছরই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে। আগে ভারত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম কিনত। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। ভারত এখন ঘরে বসেই তৈরি করছে সামরিক সরঞ্জাম যাতে বিশ্বের মুখোমুখি হতে না হয়।
জানা গেছে, এবার ফাইটার প্লেনে ব্যবহৃত ‘GE-414’ ইঞ্জিন এখন ভারতেই তৈরি হবে। এটি একটি টার্বোফ্যান ইঞ্জিন, যা মার্কিন নৌবাহিনী এবং অনেক দেশের যুদ্ধবিমানে ব্যবহৃত হয়।প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং শুক্রবার তিরুবনন্তপুরমে বলেছেন যে GE-414 ইঞ্জিন এখন ভারতেই তৈরি হবে। এটি দেশের ইঞ্জিন উৎপাদন ক্ষমতার ব্যাপক অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে কাজ করবে। তার সাম্প্রতিক আমেরিকা সফরের কথা উল্লেখ করে, তিনি বলেছিলেন যে তিনি আমেরিকান প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির সাথে আলোচনা করেছেন এবং তিনি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রোগ্রামে যোগ দিতে আগ্রহী।
ভারতের মাটিতে তৈরি হচ্ছে ৬৫ শতাংশ সামরিক সামগ্রী
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী এদিন বলেন যে, একটা সময় ছিল যখন ভারত প্রতিরক্ষা চাহিদা পূরণের অন্য দেশের ওপর নির্ভরশীল ছিল। প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের প্রায় ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ অন্যান্য দেশ থেকে আমদানি করা হত। তবে আজ এই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে বলে জানান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তিনি বলেন যে, এখন ভারতের মাটিতে ৬৫ শতাংশ উৎপাদন হচ্ছে। মাত্র ৩৫ শতাংশ অস্ত্র বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে বলে জানান রাজনাথ সিং।
প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ভারতের
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বলেছেন যে ভারতের সামরিক সামগ্রীর বার্ষিক উৎপাদন ১.২৭ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এই আর্থিক বছরে তা ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তিনি আত্মবিশ্বাসী হয়ে বলেছেন যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক ২০২৯ সালের মধ্যে ৩ লক্ষ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সামগ্রী উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। তিনি বলেন, “আজ আমরা ভারতে তৈরি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রপ্তানি করছি। ভারতের প্রতিরক্ষা রপ্তানি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২১,০০০ কোটি টোকা অতিক্রম করেছে। আমাদের লক্ষ্য ২০২৯ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা রপ্তানি ৫০,০০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা।”
সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সুযোগ বাড়ছে
এসবের পাশাপাশি এদিন রাজনাথ সিং বলেছেন যে ভারতের সেনাবাহিনীতে মহিলাদের সুযোগ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমরা ভারতের তিন সেনাবাহিনীতে মহিলাদের জন্য সুযোগ বৃদ্ধি করেছি। মহিলাদের জন্য স্থায়ী কমিশনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এমনকি মহিলাদের জন্য ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমি খোলা হয়েছে৷ আমাদের সরকার নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী নেতৃত্বাধীন উন্নয়নের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে।”