দেড় কোটি বছরের পুরনো ইতিহাসের সন্ধান, বীরভূমের মুকুটে নয়া পালক! জেনে গর্ব হবে

বীরভূম (Birbhum) তো অনেকেই গিয়েছেন। বীরভূমের প্রসঙ্গ উঠলেই সকলের মাথায় একটাই নাম ঘোরাফেরা করে। আর তা হল শান্তিনিকেতন, তারাপীঠ। হ্যাঁ বীরভূমের এই জায়গাগুলি  বিশ্ববিখ্যাত। কিন্তু আপনি কি জানেন যে বীরভূমের মুকুটে আরও এক নয়া তকমা জুটেছে। যা শুনে বীরভূমের মানুষের পাশাপাশি আপনিও পশ্চিমবঙ্গের (West Bengal) বাসিন্দা হয়ে গর্ব অনুভব করবেন।

গোটা বিষয়টি জানতে চোখ রাখুন এই প্রতিবেদনটিতে। আপনিও যদি বীরভূমের বাসিন্দা হয়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই আমখোই সম্পর্কে শুনে থাকবেন। বোলপুর (bolpur) থেকে অদূরে বীরভূম জেলার বনাঞ্চলের মধ্যে অবস্থিত আমখোই গ্রামটি জলের অভাবে ভুগছিল। এটি একটি পুকুর খনন করার সময় পেট্রিফাইড কাঠের অবশিষ্টাংশ আবিষ্কৃত হয়েছিল। শীঘ্রই বিশেষজ্ঞরা বুঝতে পেরেছিলেন যে এগুলি এমন একটি গাছের অবশিষ্টাংশ যা কিনা ১৫ মিলিয়ন থেকে ২০ মিলিয়ন বছর আগে সেখানে বিদ্যমান ছিল। তবে কালের নিয়মে সেটা হারিয়ে গিয়েছিল।

যাই হোক, এগুলি অ্যাঞ্জিওস্পার্ম (ফুলের গাছ) কাঠ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। স্থানীয় বন বিভাগের মতে, মায়োসিন যুগের শেষের দিকে এই অঞ্চলে একটি বিশাল বন বিদ্যমান ছিল। এদিকে ফসিলসকে ঘিরে সেই সময়ে শোরগোল পড়ে যায়। এই ঘটনাটি ঘটেছিল আজ থেকে ঠিক ৭ বছর আগে। এরপর এই জীবাশ্মগুলিকে উদ্ধার করে লখনউয়ের বিখ্যাত বীরবল সাহানি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখান থেকে জানা জায় যে এগুলি মায়োসিন যুগের। অর্থাৎ প্রায় দু কোটি বছরের পুরানো এই জীবাশ্ম।

বর্তমানে এই জায়গাটিকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এটি এখন উড ফসিল পার্ক বলে পরিচিত বা আমখোই ফসিল পার্ক হিসেবেও পরিচিত। এই বিশেষ পার্কটি দেখতে সারাবছরই পর্যটকরা ভিড় জমান। আজ আমখোই জীবাশ্ম উদ্যান ভারতের শীর্ষস্থানীয় জীবাশ্ম উদ্যানগুলির মধ্যে নিজের স্থান করে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, এই জায়গাটিকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়ার তোড়জোড় অবধি শুরু হয়ে গিয়েছে বলে খবর।

বিজ্ঞানীরা আরও আবিষ্কার করেছেন যে এখানে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া কিছু গাছ এখনও ভারতের পশ্চিম ঘাট অঞ্চলের পাশাপাশি মায়ানমার এবং মালয়েশিয়ায় দেখা যায়। গবেষকদের মতে, এই জীবাশ্মগুলি ইঙ্গিত দেয় যে বর্তমান বীরভূম জেলার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত রাজমহল পাহাড় এবং ছোট নাগপুর মালভূমির উচ্চভূমিতে বিশাল বনের অস্তিত্ব ছিল। এটি অনুমান করা হয় যে গাছগুলি মাঝে মাঝে বন্যায় ভেসে গিয়েছিল এবং সূক্ষ্ম বালি এবং কাদামাটি দ্বারা আচ্ছাদিত হয়েছিল, যার ফলে ধীরে ধীরে জীবাশ্মে রূপান্তরিত হয়েছিল।