যুবতীদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ২৪ বিয়ে! অবশেষে গ্রেফতার টাকা, গহনা নিয়ে চম্পট দেওয়া বাংলার বর

বর্তমান দিনে অপরাধের সংজ্ঞাই বদলে গিয়েছে। আগেকার দিনের মতো চুরি বা ছিনতাই না হলেও হালে অপরাধীদের অপরাধে সৃজনশীলতা দেখে চমকে যাচ্ছে খোদ পুলিশ। সদ্যই ধরা পড়েছে দাগী আসামি আশাবুল মোল্লা। তার অপরধের বহর দেখে অবাক খোদ পুলিশ। জানা যাচ্ছে ২৪ জন মহিলার সাথে ভুয়ো পরিচয়ে বিয়ে করে সর্বস্ব লুট করে নিয়ে গেছে আশাবুল।
তার কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে জানা যায় পুলিশের কাছ থেকে। ধৃত আশাবুল কোনো এক গ্রামে নিজেকে গাড়ি পরিচালকের পরিচয় দিয়ে ঘর ভাড়া নেয়। এরপর গ্রামের মানুষের কাছে সহানুভূতি আদায়ের জন্য নিজেকে অনাথ বলে দাবী করতেন তিনি। এরপর শুরু হতো তার আসল খেলা। গ্রামের কোনো এক কিশোরীকে ভালোবাসার টোপ দিয়ে ফাঁসিয়ে বিয়ে করত ধৃত আশাবুল। আর তার কিছুদিন পরই বেপাত্তা সে।
বেপাত্তা হওয়ার সাথে সাথে শ্বশুরবাড়িতে থাকা নতুন বৌ এর গয়নাও হওয়া তার সাথে। ব্যাস সেই এলকা থেকে দূরে অন্য কোথাও একই ছন্দে ফের বিয়ে করতে নেমে পড়তো সে। শুধু তাই না, দাগী আসামির মত নিজের একাধিক ভুয়ো পরিচয়ে আধার কার্ড তৈরি করতো সে। তবে দুই ডজন বিয়ের পর ধরা পরে সেই জোচ্চোর বর আশাবুল মোল্লা।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে যে, মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির প্রতারিত এক যুবতীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সেখানেই ওই মহিলা জানান যে, পরিবারের মোট জমানো টাকা, সমস্ত সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দেয় তার স্বামী। যদিও তার আসল নাম জানতেন না তার ওই স্ত্রী। এরপর তার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনোভাবেই তাকে পাওয়া যায়নি।
নববধূর করা রিপোর্টের ভিত্তিতে তার খোঁজ শুরু করে পুলিশ। এরপর গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায় যে, উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে খোঁজ মেলে তার। ব্যাস তারপরও অ্যাকশনে নেমে গ্রেফতার করে আশাবুল মোল্লাকে। গ্রেফতারির সময় তার কাছ থেকে মেলে একাধিক সিম কার্ড, ভুয়ো নথি আর কিছু নগদ টাকা। এদিকে কোনো জায়গাতে বেশিদিন না থাকায় এবং সেইসাথে ভুয়ো পরিচয়ে সিম কার্ড নেওয়ায় সহজে পুলিশের জালে আসছিল না আশাবুল মোল্লা।
অবশেষে তাকে দত্তপুকুর থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। একাধিক অপরাধ করলেও সেই ব্যাপারে ঘুণাক্ষরেও জানতে পারেনি তার পাড়াপ্রতিবেশীরা। নাম যাচ্ছে তার আসল বাড়ি বারাসত এর কাজিপাড়ায়। প্রসঙ্গত, বৃহষ্পতিবার আসামিকে জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করা হলে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।