খুনের হুমকি, পড়েন ভয়ঙ্কর গ্যাংস্টারের খপ্পরে! মাথা নত না করে যা করেছিলেন রতন টাটা, শুনে গর্ব হবে

ব্যবসায়ী রতন টাটা (Ratan Tata)-কে নিয়ে আলোচনা অন্ত নেই মানুষের। ভারতীয় শিল্পের দুনিয়ায় তাঁকে মসিহা বলা হয়। রতন টাটাকে যারা চেনেন তাঁরা সকলেই বলেন, তাঁর মতো সহৃদয় ব্যক্তি খুবই কম আছেন।

তিনি বরাবর তাঁর সহজ সরল জীবনযাপন করা নিয়ে বারবার শিরোনামে উঠে আসেন । কিন্তু সব মানুষেরই জীবনে কিছু না কিছু ডার্ক সিক্রেট থাকে। তা কেউ প্রকাশ্যে আনেন আবার কেউ কেউ আনতে চান না। কিন্তু রতন টাটা সেই ডার্ক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। যা শুনে হয়তো আপনি আকাশ থেকে পড়বেন। আপনিও কি জানতে চান কি সেই কথা লুকিয়ে রয়েছে রতন টাটার জীবনে? তাহলে নজর রাখুন এই প্রতিবেদনটির ওপর।

সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকার প্রবীণ শিল্পপতিকে ‘শিল্পরত্ন’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, তাঁর সাথে সম্পর্কিত প্রায় এক দশক পুরানো একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যেখানে তিনি টাটা গ্রুপের (Tata Group) চেয়ারম্যান হিসাবে তাঁর প্রথম দিনগুলিতে এক গ্যাংস্টারের সাথে এনকাউন্টারের গল্প বলছেন। হ্যাঁ একদম ঠিক শুনেছেন।

অনেকেই হয়তো জানেন যে রতন টাটা ১৯৯১ সালে টাটা গ্রুপের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। এর পরে, তিনি তার ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নিয়ে টাটা গ্রুপকে অনেক দেশে নিয়ে যান। অটোমোবাইল ছাড়াও যোগাযোগ, রাসায়নিক খাতে টাটা গ্রুপের পরিধি বেড়েছে। তিনি ২০১২ সাল পর্যন্ত টাটা সন্সের চেয়ারম্যান ছিলেন। রতন টাটা ২০০০ সালে পদ্মভূষণ এবং ২০০৮ সালে পদ্মবিভূষণে ভূষিত হন।

যাইহোক, কলম্বিয়া বিজনেস স্কুল তাদের ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও শেয়ার করেছে, যা প্রায় এক দশক পুরানো। রতন টাটা নিজেই জানিয়েছেন, টাটা গ্রুপের চেয়ারম্যান থাকাকালীন জামশেদপুরের টাটা মোটরস প্ল্যান্টে (প্রাক্তন টেলিকম সংস্থা) কাজ করার সময় এক গ্যাংস্টার তাঁকে খুন করার হুমকি অবধি দিয়েছিল।

রতন টাটার কর্মজীবন শুরু হয়েছিল টাটা স্টিল দিয়ে। টাটা স্টিল এবং টাটা মোটরসে কাজ করার সময় তিনি জামশেদপুরে থাকতেন। এ সময় এ ঘটনা ঘটে। তিনি বলেছিলেন যে জামশেদপুরে টাটা মোটরসে কাজ করার সময় তিনি এক ভয়ঙ্কর গ্যাংস্টারের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তাঁকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সেইসময়ে কয়েকজন দুষ্কৃতী টাটা মোটরসের ইউনিয়ন দখল করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল।

রতন টাটা জানান, “আমি চেয়ারম্যান হওয়ার পনেরো দিন পরে, টাটা মোটরসে আমাদের ইউনিয়ন নিয়ে একটি বিশাল সমস্যা হয়েছিল। একজন গ্যাংস্টার সিদ্ধান্ত নেয় যে ইউনিয়ন দখল করবে সে। গ্যাংস্টারের কাছে প্রচুর সংখ্যক লোক ছিল। এটা খুবই ভীতিকর ছিল। লোকেরা পরামর্শ দিচ্ছিল যে আমি গ্যাংস্টারের পরামর্শ গ্রহণ করি এবং কথাবার্তার মাধ্যমে একটি মধ্যস্থতায় আসি। কিন্তু আমি এই সমস্ত পরামর্শ বাদ দিয়ে এর মুখোমুখি হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। সে সময় পুলিশও অসহায় ছিল এবং গ্যাংস্টারটি টাটা মোটরস প্ল্যান্টের কর্মচারীর উপর হামলা অবধি চালিয়েছিল। তাও আমি মাথা নত করিনি।“

তিনি বলেন, ‘দুষ্কৃতীরা এখানেই থেমে থাকেনি। গ্যাংস্টার ধর্মঘটে বসেছিল। এদিকে সেই সময়ে কর্মচারীরা হামলার ভয়ে কাজে আসতে অস্বীকার করেছিল। এরপর কর্মীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আমি নিজে কারখানায় ছিলাম। এ সময় আমি বোনাস ঘোষণা করি, এরপর ধর্মঘট শেষ হয়।‘  যদিও শেষমেষ সেইসময়ে গ্যাংস্টারটি ধরা পড়ে।