একসময় রাস্তায় চালাতেন অটো, নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে দরিদ্র পরিবারের সন্তান আজ বিমানের পাইলট

পরিশ্রম করলে তার ফল যে মিলবেই তার ভুরি ভুরি উদাহরন রয়েছে সারা দেশে। কিন্তু সেকথা যেন আবারো প্রমাণ করে দিয়েছেন শ্রীকান্ত পান্তওয়ানে (Shrikant Pantawane)। ছোটো থেকে একটাই শখ ছিল তার, তিনি পাইলট হবেন। কিন্তু বাড়ির আর্থিক অবস্থা এমনটা ছিলনা যে, তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছাবেন। কিন্তু তাই বলে তিনি হাল ছেড়ে দেননি। নিজের লক্ষে পৌঁছানোর জন্য করেছেন কঠোর পরিশ্রম। আর আজ তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছেছেন। কিন্তু কীকরে পেলেন তার লক্ষ্য? কিরকম ছিল তার এই সফর? রইলো আমাদের বিশেষ প্রতিবেদন।
নাগরপুরে জন্মগ্রহণ করেন শ্রীকান্ত। ছোটবেলা থেকেই দারিদ্র্যপীড়ায় জর্জরিত হয়েছেন তিনি এবং তার পরিবার। কোনরকমে নিজের পড়াশোনা সম্পুর্ন করতে পারেন শ্রীকান্ত। আর সেই ছোট্টবেলা থেকেই পাইলট হতে চেয়েছেন তিনি। কিন্তু কিভাবে নিজের স্বপ্নপূরণ করবেন তিনি? বাড়িতে যে নুন আনতে পান্তা ফুরায়। কিন্তু শ্রীকান্ত আর পাঁচজনের মতো দমে যাওয়ার পাত্র নন। স্কুলে পড়াকালীন শুরু করেন ডেলিভারী বয়ের কাজ। কিন্তু পরিস্থিতির চাপে নিজের পড়াশোনা বন্ধ করতে বাধ্য হন তিনি। শুরু করেন পরিবারের জন্য অর্থ উপার্জন।
তিনি শুরু করেন অটো চালানো। এমতঅবস্থায় একদিন যাত্রী চাপিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছালে তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, তার স্বপ্ন তিনি পূরণ করেই ছাড়বেন। ভাগ্যের ফেরে হঠাৎই একদিন চা এর দোকানে তার দেখা হয় এক বিক্রেতার সাথে। তিনি তাকে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন পাইলট স্কলারশিপ প্রোগ্রাম সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। ব্যাস তারপর বাকিটা তার স্বপ্নের উড়ান, তিনি এই স্কলারশিপ প্রোগ্রামের অধীনে মধ্যপ্রদেশের একটি ফ্লাইট স্কুলে ভর্তি হয়ে বিমান চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। তবে তার সাথে একটি কোম্পানিতে চাকরিও করছিলেন তিনি। এরপরই আসে তার সেই কাঙ্খিত সাফল্য।
দিনরাত এক করে পরিশ্রম করে শ্রীকান্ত নিজের স্বপ্ন পুরন করেন। ফ্লাইং পরীক্ষায় ছাড়পত্র পেতেই মিলে যায় চাকরি। দেশীয় সংস্থা ইন্ডিগো তে পাইলট হিসেবে যোগ দেন তিনি। শ্রীকান্ত বুঝিয়েছেন যে, অদৃষ্টকে দুষে নিজের ভাগ্য ফেরানো যায়না। কঠোর পরিশ্রম আর অসম্ভব মানসিক জেদ থাকলে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছানো শুধু সময়ের অপেক্ষামাত্র। তার এই কাহিনী আজ লাখো যুবকের কাছে এক ইন্সপিরেশন।