লকডাউনে চাকরি খুইয়ে শুরু করেন অভিনব পদ্ধতিতে চাষ, আজ প্রতি মাসে ১৫ লাখ টাকা আয়

করোনা মহামারীর কারণে কর্মহীন হয়েছে দেশের লাখ লাখ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে অনেকের কাছেই নেই জীবিকার কোনো বিকল্প। তাই কেউ কেউ বেছে নিয়েছে চাষবাস। আজ এই প্রতিবেদনে এমন এক ব্যক্তির কথা বলবেন যিনি শহরের এক নামীদামী স্কুলে চাকরি করতেন কিন্তু লকডাউনে চাকরি এবং বকেয়া টাকা দুই খুইয়ে বসেন।
সেই সময় তিনি বিকল্প হিসেবে স্ট্রবেরি চাষের কথা ভাবেন। বারাণসীর পরমহংস নগর কান্ডোয়ার বাসিন্দা রমেশ। BHU থেকে নিজের পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন তিনি। এরপর শহরের একটি নামী স্কুলে চাকরি নেন তিনি। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিলো। কিন্তু হঠাৎ করেই এই মহামারি এসে তছনছ করে দিলো রমেশের জীবন।
সেইসময় তিনি এবং তার এক বন্ধু মদন মোহন কৃষিকাজ শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন। দুই বন্ধুই প্রথমে ইন্টারনেট থেকে ভিন্নভাবে চাষের নিয়মকানুন শিখে তারপর স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। এক পরিচিতের কাছ থেকে ১০ বছরের জন্য আমড়া খয়রা চকে দুই একর জমিও ধার নেন রমেশ। এরপর অক্টোবর থেকেই শুরু হয়ে যায় চাষের কাজ।
এমতাবস্থায় চাষের পদ্ধতি আরো ভালোভাবে জানার জন্য পুনের এক কৃষিবিদের সাথেও যোগাযোগ করেন রমেশ। সেখান থেকেই চারা নিয়ে এসে শুরু করেন চাষ। মাত্র দু’মাসের মধ্যেই ফলন দেখা যায়। জেনে অবাক হবেন যে, এই মুহূর্তে তিনি শুধু চাষবাস থেকেই ১৫ লাখ টাকা উপার্জন করেন। পাশাপাশি জানিয়ে রাখি, রমেশ তার জমিতে কোনোরকম কোনো কেমিকেলের ব্যবহার করেননা।
বর্তমানে সবাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং কেমিকেলমুক্ত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খাঁটি খাবারের দিকে বেশি নজর দিয়েছে। তাই স্বাভাবিকভাবেই তার উৎপাদিত ফসলের চাহিদাও বাজারে ব্যাপক। এই বিষয়টি মাথায় রেখে, রমেশ এবং মদন স্ট্রবেরির পাশাপাশি হলুদ তরমুজ এবং রেড লেডি পেঁপে চাষ করার সিদ্ধান্ত নেন। আর তাদের এই সিদ্ধান্ত আজ ১০ জনেরও বেশি বেকার যুবকের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে।
রমেশের কথা থেকেই জানা যায়, তিনি অক্টোবরে চাষ শুরু করেছেন এবং তখন থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা এসেছে তার লাভের ঝুলিতে। বারাণসীতে স্ট্রবেরি প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হয় এবং এখন তাদের লক্ষ্য বিদেশে স্ট্রবেরি পাঠানো।
এখন তিনি অন্যান্য কৃষকদেরও স্ট্রবেরি চাষের পরামর্শ দেন, এটি কেবল মুনাফাই আনবে না এটি বেকারদের কর্মসংস্থানও দেবে। বারাণসীর এই স্ট্রবেরি চাষের কথা শুনে অনেকেই পরিবার নিয়ে রমেশের খামার বাড়ি দেখতে আসেন। এইমুহুর্তে রমেশ ও মদনের এই স্ট্রবেরি চাষ আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।