এমন পদক্ষেপ নিতে চলেছে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক, ভারতে হলে বেঁধে যেত তুলকালাম

বর্তমানে বেশ বড় আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে পাকিস্তান (Pakistan)। দেশের কাঙাল অবস্থা কাটিয়ে উঠতে কোনোকিছুই পর্যাপ্ত হচ্ছেনা। এমনকি সাহায্যের জন্য IMF (International Monetary Fund) এর কঠোর শর্ত মেনে নিলেও কাজে আসছেনা কোনোকিছুই। পাকিস্তানের মধ্যে যেভাবে রাক্ষুসে আকৃতি ধারণ করেছে মুদ্রাস্ফীতি তা সারা দেশকেই গিলে খেতে বসেছে। এতদিন সাধারণ মানুষকে জ্বালানোর পর এবার তার প্রভাব পড়েছে পাকিস্তানি সৈন্যদের ওপর।
এসবের মধ্যে পাকিস্তানি ব্যাংক যে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে তার গুরুতর প্রভাব পড়বে দেশটির অর্থনীতির ওপর। জানা যাচ্ছে পাকিস্তানের ব্যাংকগুলো সুদের হার বাড়ানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু সেই হার ১০-২০ পয়েন্ট না, একেবারে ২০০ BPS বাড়তে পারে সুদের হার। জানা যাচ্ছে পাকিস্তানি স্টেট ব্যাংক এই সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
ইতিমধ্যেই সেদেশে মুদ্রাস্ফীতি ১৭% ছাড়িয়ে গিয়েছে। যার ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্য মানুষের হাত থেকে উধাও হতে বসেছে। ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের তরফেও সুদের হার বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেই পরিমাণ পাকিস্তানের সামনে একেবারেই কম। পাকিস্তানে ৮ গুণ সুদের হার বাড়ানো হয়েছে।
এসবের মধ্যে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে পৌঁছেছে আর তারপর সেটি আরো কমতে চলেছে। IMF থেকে যে ১.১ বিলিয়ন ডলারের আর্থিক সাহায্য আসার কথা, সেটাও এখনো আটকে রয়েছে। এসবের পাকিস্তানের ‘আয়রন ব্রাদার’ চিন মাত্র ৭০০ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে।
আসলে IMF এর থেকে প্যাকেজ নেওয়ার একদম শেষ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। এদিকে পাকিস্তানের মুদ্রাস্ফীতী ৪০% ছাড়িয়ে গেছে। যার ফলে সেখানে বিরাট বড় মাপের খাদ্য সংকট তৈরী হয়েছে। আটা, দুধ ইত্যাদির দাম ১৫০ টাকার ওপরে পৌঁছেছে। পেট্রোলের দাম বেড়ে হয়েছে ২৭২ টাকা। কিন্তু কত দাম বেড়েছে সেখানে?
নীচে তালিকার মাধ্যমে জানানো হলো, কত শতাংশ দাম বেড়েছে বিভিন্ন পণ্যের :
পেঁয়াজ : ৩৭২%
মুরগি : ১০১.৮৬%
ডিজেল : ৮১.৩৬%
ডিম : ৮১.২২%
টমেটো : ৬৫.৩০%
ভাঙ্গা চাল : ৭৩.০৫%
ডাল ছোলা : ৫৬.৯৩%
এসবের মধ্যে আবার পাকিস্তানি সেনাবাহিনীরও খারাপ সময় শুরু হয়েছে। সৈন্যদের দুইবেলা পর্যাপ্ত খাবার দেওয়াও সম্ভব হচ্ছেনা। এজন্য অফিস ও কর্মচারীর সংখ্যা কমানোর কাজও করা হচ্ছে দেশটির তরফে। এমনকি খরচ কমানোর জন্য সেদেশের মন্ত্রী এবং উপদেষ্টাদের ইকোনমি ক্লাসে ভ্রমণ করার, বিলাসবহুল গাড়ি এবং বেতন ভাতা ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে আবার সরকারি অফিসগুলোকেও ১৫% ব্যয় কমানোর নির্দেশ এসেছে।
পাকিস্তানের অবস্থা দেখে অনেকেই পাকিস্তানের পূর্ব রাষ্ট্রপতি জুলফিকার আলী ভুট্টোর কথা মনে করছেন। তার বক্তব্য ছিল ঘাস খেলেও পাকিস্তান পারমাণবিক বোমা বানাবেই, কিন্তু বর্তমানে পাকিস্তানের যা অবস্থা তাতে ঘাস খাওয়ার টাকাও নেই সেদেশের কাছে। ডাল ভাত খেতে চাইলেও ঘটি বাটী বিক্রি করার অবস্থায় পৌঁছেছে পাকিস্তান!