নিজের পরিবার আটকে বন্যায়, তবুও মানুষের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত সেনাকর্তা! ভারত জুড়ে হচ্ছে প্রশংসা

মাত্র কয়েকদিন আগেই সারা দেশজুড়ে প্রতিবাদ চলে সরকারের অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে। সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চেয়ে ট্রেনই পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু এতসবের মধ্যেও দেশের সেনাবাহিনী নিজেদের না জড়িয়ে তারা দেশসেবার ব্রত। বন্যা কবলিত অসমে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অফিসার ক্যাপ্টেন রুপম দাস নিজের পরিবারের আগে জনগণের সেবা করে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। অফিসার রূপম দাসের নিজের পরিবার বন্যায় আটকা পড়লেও তিনি বাঁচিয়েছেন শতাধিক প্রাণ।
আসলে অসমে চলেছে প্রবল বন্যা। সেখানে সেনাবাহিনীর অফিসার রূপম দাস বন্যা কবলিত এলাকায় উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন। তার সাহসী পদক্ষেপের কারণে তিনি প্রাণ বাঁচিয়েছে বহু সাধারণ মানুষের। তার এই অভিযান সম্পর্কে সেনার সদস্যরা জানান যে, প্রবল বন্যা কবলিত অসমে উদ্ধারকার্য চালানোর সময় তার নিজের পরিবার আটকে থাকা সত্বেও তিনি আগে শতাধিক মানুষের প্রাণ বাঁচিয়েছেন তারপর তিনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।
আসলে ভারতীয় সেনাবাহিনী যে শুধুই একটা চাকরী নয়, তার চেয়ে বেশি কিছু, একথা সেনা জওয়ানরা বারেবারে প্রমাণ করে দিয়েছেন, আর সেইকথারই আবার প্রমাণ মিলল অসমে। সেনাবাহিনীর তরফে জারি করা এক বিবৃতিতে রুপম দাস সম্পর্কে তারা বলেছেন যে , “তার এদিনের সাধারণ মানুষের জন্য করা কাজ, মানবতার প্রতি তার নিঃস্বার্থ সেবার একটি ব্যতিক্রমী উদাহরণ।” তারা আরো বলেন যে, “এই ধরনের অনুপ্রেরণামূলক কাজ ব্যতিক্রমী মানবিক মূল্যবোধ এবং শক্তিশালী সামরিক সক্ষমতাকে প্রকাশ করে।”
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, অসমের বন্যা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে চার দিন আগে দেশের সেনাবাহিনী উদ্ধারকার্যে নামে। সেনাবাহিনীর চতুর্দশ ব্যাটালিয়ন ইতিমধ্যেই রাজ্যের সাতটি জেলায় সাড়ে চার হাজারেরও বেশি মানুষকে উদ্ধার করেছে। কিন্তু এরই মধ্যে খারাপ খবর এই যে, বন্যার ফলে রবিবার আরও নয়জনের মৃত্যু হয়েছে। বন্যা কবলিত হওয়ার কারণে বর্তমানে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১-এ দাঁড়িয়েছে।
বন্যার ফলে অসমের ৩৩টি জেলাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মোট ৪২.২৮ লক্ষ মানুষ। ইতিমধ্যে বাতিল হয়েছে বহু ট্রেন। গত রবিবার ডিব্রুগড়ে ব্রহ্মপুত্রে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় চারজনের নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। তাছাড়া আশেপাশের রাজ্য মেঘালয়েও বন্যার প্রভাবে ধস নামতে দেখা গিয়েছে।