বেশ করেছে রূপঙ্কর! আমি ওঁর পাশে আছি, সবার পাশে থাকা উচিৎ! KK-র মৃত্যু নিয়ে নচিকেতা চক্রবর্তী

কলকাতায় (Kolkata) কেকের (KK) কনসার্টের পর তার মৃত্যু নিয়ে অনেক জলঘোলা চলছে। এরই মধ্যে, কেকের কলকাতা সফর ঘিরে রূপঙ্কর বাগচীর (Rupankar Bagchi) করা আলপটকা মন্তব্য নিয়েও বাঙালিদের মধ্যে আলোচনার শেষ নেই। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে তীব্র আক্রমণ চলছে রূপঙ্করের ওপর। বাঙালিরাই মেনে নিতে পারছেনা রূপঙ্করকে। কিন্তু দীর্ঘদিন সংবাদ মাধ্যমে না থাকার পর, এদিন এই বিতর্কে গা ভাসালেন নচিকেতা চক্রবর্তী (Nachiketa Chakraborty)।
দীর্ঘদিন পর এই বিতর্কের সৌজন্যে কিছুটা লাইমলাইটে এলেন তিনি। তার মতে, রূপঙ্করের সাথে বাঙালি যেটা করছে সেটা ভীষণ অন্যায়। বাঙালিকে রূপঙ্করের অভিমানটাও বুঝতে হবে। তিনি এদিন রূপঙ্করের পক্ষ নিয়ে বলেন, “ওর অভিমানকে যদি আমরা বুঝতে না পারি, তা হলে তো ধরে নিতে হবে, আমাদের অনুভূতি বোধটাই উবে গিয়েছে। আমরা কি গাধা হয়ে গিয়েছি! না না, গাধা নয়, গাম্বাট! এক জন বাঙালি শিল্পী তার অভিমানের জায়গা থেকে একটা কথা বলল। আর আমরা সেটাকে ধরতেই পারলাম না। অন্য ব্যাখ্যা করছি! আরে রূপঙ্কর জ্যোতিষী নাকি! ও কী করে জানবে, কেকে মারা যাবে!”
শুধু তাই নয়, এদিন তিনি রাজনৈতিক দলগুলোকেও একহাত নিয়েছেন। তার মতে রাজনৈতিক দলগুলো, বিশেষ করে বিজেপি এবং সিপিএম ময়দানে নেমে এমন ভাব দেখাচ্ছে যেন ভিড়ের কারণেই মৃত্যু হয়েছে কেকে-র। তার মতে কেন্দ্র সরকার এবার হয়তো একটা আইনও বানিয়ে দিতে পারে যেখানে একসাথে কোথাও ২০ জনের বেশি থাকতে পারবেন না।
তবে শিল্পীর ক্ষেত্রে যে ভিড় কতটা জরুরি সেই বিষয়েও দৃকপাত করেন তিনি। তিনি স্পষ্টই বলেন যে,“ কলকাতাতে রাজার মতো মৃত্যু হয়েছে কেকে-র। এমন মৃত্যুই তো সকলে চায়। আমরা শিল্পীরা আসলে জনসমুদ্রে মিশে যেতে চাই। ওই ভিড়ে পিষ্ট হতে চাই। ভিড়ের চাপে মরে যেতে চাই। ওখানেই তো শিল্পীর সার্থকতা। শ্রোতাদের ভিড়ে এক জন শিল্পী মিশে গিয়ে জীবনের শেষ গান শোনাচ্ছেন, এটাই শিল্পীর স্বপ্ন। কেউ কেউ বলছেন, ভিড়ের কারণেই মৃত্যু হয়েছে কেকে-র। মোটেও নয়। গাঁধীজি জনসমুদ্রে মিশেছেন। ইন্দিরা গাঁধী থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এমনকি নরেন্দ্র মোদীও জনসমুদ্রে মিশে যেতে চান। যানও। ওঁরা রাজনৈতিক ‘পারফর্মার’। আমরাও ‘পারফর্মার’, তবে সাংস্কৃতিক। আমাদের সকলেরই এই ভিড়ের খিদে থাকে। মাইকেল জ্যাকসনের ছিল, এলভিস প্রেসলির ছিল, কেকে-র ছিল আর আমারও আছে।”
জিৎ গাঙ্গুলি এদিন নচিকেতাকে ফোন করে জানান কেকের এই হঠাৎ মৃত্যু সংবাদ। এমনকি তিনি নাকি নচিকেতাকে এও বলেন যে, কেকে নচিকেতার গান শুনতেন এবং বেশ পছন্দও করতেন। জদিও নচিকেতা নিজে যে একজন বিরাট কেকে ফ্যান সেটাও মনে করিয়েছেন তিনি। কিন্তু এরপর রূপঙ্করকে ডিফেন্ড করে তিনি বলেন যে, “ আমি বিশ্বাস করি, রূপঙ্কর কেকে-কে ব্যক্তিগত আক্রমণ করতে চায়নি। ও শুধু একটা অভিমানের কথা বলতে চেয়েছে। বাঙালি শিল্পী যখন অন্য রাজ্যে যায়, তখন ক’টাকা পারিশ্রমিক পায়! আর বম্বের শিল্পী এখানে এলে কত পায়! সাধারণ মানুষ এ সব জানেন না। অভিমানটা আছে, থাকবে। থাকাটাই স্বাভাবিক।”
যদিও তার কষ্ট হয়েছে রূপঙ্কর যাদের নাম নিয়েছে তারা কেউই তার পাশে না দাঁড়ানোয়। তার মতে রূপঙ্কর যাদের হয়ে এই যুদ্ধে নামলো তারাই তাকে বুঝলনা। অন্তত রাঘব, ইমনদের তার পাশে দাঁড়ানো উচিত ছিল। কিন্তু তিনি, ‘নচিকেতা’ যে সবসময়ই রূপঙ্কর পাশে থাকবেন তা স্পষ্ট করে দেন এদিন।