৩ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেন ব্যবসা, ছেড়ে যান স্বামী! আজ ১৩০ কোটি টাকার কোম্পানির মালিক

সমস্যার নামই তো জীবন। আমাদের চলার পথে কত বাধার সম্মুখীন হতে হবে তার ইয়ত্তা নেই। এখন আমরা যদি কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত কষ্টের পরে হাল ছেড়ে দিয়ে বসে থাকি তবে আমাদের স্বপ্ন কখনই পূরণ হবেনা। কিন্তু সাহসিকতার সঙ্গে সেই সমস্যাগুলির মোকাবেলা করলে একদিন অবশ্যই কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এসে ধরা দেবে। এই কথাটিই প্রমাণ করে দেখিয়েছেন নীলম মোহন।
নীলম এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি মাত্র ৩০০০ টাকার বেতনকে সম্বল করে আজ ১৩০ কোটি টাকার কোম্পানি দাঁড় করিয়েছেন। বেনারসের হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ পড়ার সময়ই তার বিয়ে হয়ে যায়। মাত্র ২১ বছর বয়সে সংসার জীবনে ঢুকে পড়তে হয় নীলমকে।
বিয়ের পর স্বামীর কর্মস্থল দিল্লিতে স্থানান্তরিত হওয়ার পর নীলমের মনে হয়, তার নিজের স্বপ্নগুলোকেও এবার ঘষামাজা করা উচিত। আর এই তাগিদেই ২২ বছর বয়সে ‘ফ্যাশন’ নামে একটি কোম্পানি খুলে ফেলেন। যদিও তার কিছুদিন পর অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় কাজ থেকে ছুটি নিতে হয়েছিলো তাকে।
এরপর ছেলে সিদ্ধার্থ খানিক বড়ো হলে দিল্লিতে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে পুরুষদের পোশাক ডিজাইনের কাজ শুরু করেন এবং ইউপি এক্সপোর্ট কর্পোরেশনের সাথে কাজ শুরু করেন। তখন তিনি মাসে মাত্র তিন হাজার টাকা বেতন পেতেন। কিন্তু জীবনে বড়ো কিছু করার চাহিদা তখনও মরেনি। তাই বন্ধু হরমিন্দর এবং সুশীল কুমারের সাথে ১৯৮৩ সালে অপেরা হাউস প্রাইভেট লিমিটেড নামে স্টার্টআপ কোম্পানি শুরু করেন।
তাদের পরিশ্রম এতটুকুও বিফলে যায়নি। জেনে অবাক হবেন যে প্রথম বছরেই কোম্পানির বার্ষিক টার্ন ওভার ১৫ লাখের গণ্ডি ছুঁয়ে যায়। কিন্তু কথায় আছে সফলতা কিছু খারাপ জিনিসও নিয়ে আসে। উদাহরণস্বরূপ, ব্যক্তিগত কারণে ১৯৯১ সালে নীলম তার স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে যান। এর পরে, অংশীদারদের সাথে মতবিরোধ দেখা দেয়, যার কারণে নীলম বাধ্য হয়ে মাত্র ৩ কোটি টাকার বিনিময়ে নিজের অংশীদারিত্ব বিক্রি করে দেন।
এতো সমস্যার সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও নীলম হাল ছাড়েননি এবং ১৯৯৩ সালে তিনি ৪ জন টেইলর নিয়ে ম্যাগনোলিয়া ব্লসম নামে তার নিজস্ব কোম্পানি শুরু করেন । নীলম তার নতুন কোম্পানির জন্য ১ কোটি ৪০ লাখ টাকায় একটি বাড়ি কিনেছিলেন এবং সেই বাড়িতেই শুরু করেন নিজের ব্যবসা। এবং আজ তাদের কোম্পানির বার্ষিক টার্ন ওভার প্রায় ১৩০ কোটি টাকা। বর্তমানে সিদ্ধার্থ এবং তার স্ত্রী পল্লবী দুজনেই ম্যাগনোলিয়া মার্টিনিক ক্লোথিং প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক। এছাড়াও বয়স্কদের জন্য একটি বাড়িও তৈরি করেছেন নীলম।